সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
রহমত-বরকত ও নাজাতের মাস পবিত্র রমজানুল মোবারক অতিক্রান্ত হয়ে এখন চলছে শাওয়াল মাস। মাহে রমাজানের পরবর্তী মাস এবং চন্দ্র মাসের দশম মাস হচ্ছে শাওয়াল। রমজানের পরে ফজিলতপূর্ণ মাসগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। এই মাসে অনেক আমল রয়েছে। আর এসব আমলের ফজিলত-ও অনেক বেশী।
শাওয়াল মাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল হচ্ছে শাওয়ালের ‘ছয় রোজা’। রমজানের ফরজ রোজা পালনের পর শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখা মুস্তাহাব। এই রোজার অনেক ফজিলত রয়েছে যা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।
আবু আইয়ূব আনছারী রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
যে মাহে রমাজানের রোজা রাখল এরপর শাওয়ালে ছয়টি রোজা রাখল এটি তার জন্য সারা বছর রোজা রাখার সমতুল্য হবে। -(সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬৪; জামে তিরমিযী, হাদীস ৭৫৯; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৪৩৩)
হাদীসটির আরেক বর্ণনায় এসেছে-
আল্লাহ তাআলা এক নেকীকে দশ নেকির সমান করেছেন। সুতরাং (রমাজানের) এক মাস (রোজা রাখা) দশ মাসের সমান। আর সাথে ঈদুল ফিতরের পরে ছয় দিন রোজা রাখা সারা বছর রোজা রাখার সমান। -(সুনানে নাসাঈ, হাদীস ২৮৭৪)
আলোচ্য হাদিসে যে বিষয়টি বিশেষভাবে লক্ষণীয়, তা হলো- শুধু শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখলেই এক বছরের নফল রোজার সওয়াব পাওয়া যাবে তেমনটি নয়। আবার শুধু মহিমান্বিত রমজানে পুরো একমাস রোজা রাখলেও এক বছরের নফল রোজার সওয়াব দেওয়া হবে সে কথাও বলা হয়নি। বরং পুরো রমজান মাস রোজা রাখার পরে শাওয়াল মাসে আরও ছয়টি রোজা রাখলে তবেই পূর্ণ এক বছর নফল রোজা রাখার সওয়াব লাভ করা যাবে সে কথাই হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন।
বস্তুত হাদিসে পবিত্র কোরআনেরই একটি আয়াতের বক্তব্য বিবৃত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে কেউ কোনো নেক আমল করবে তাকে তার দশ গুণ সওয়াব প্রদান করা হবে। ’ (সুরা আল-আনআম: ১৬০) সুতরাং রমজানের এক মাসের ১০ গুণ হলো দশ মাস আর শাওয়াল মাসের ছয়দিনের দশগুণ হলো ৬০ দিন অর্থাৎ দুইমাস।
অর্থাৎ পূর্ণ এক বছরের নফল রোজার সওয়াব লাভের জন্য রমজানের রোজা রাখার পরে শাওয়াল মাসের ছয় রোজা রাখতে হবে। তবে, যদি কেউ কোনো কারণে রমজানের পূর্ণমাস রোজা রাখতে না পারেন, তাহলে শাওয়াল মাসের ছয় রোজা রাখা যাবে না তেমন নয়। সে ক্ষেত্রে পূর্ণ এক বছরের নফল রোজার সওয়াব না পেলেও নফল রোজা পালনের সীমাহীন নেকি তিনি পাবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
শাওয়াল মাসের যেকোনো ছয় দিন নফল রোজা রাখা যাবে। তবে, ঈদের দিন (১লা শাওয়াল) এবং ঈদের পরের দিন (২রা শাওয়াল) রোজা রাখা মাকরুহ। ঈদের ছুটির বাকি দিনগুলোতে রোজা রাখা উত্তম।
১. অন্যান্য নফল রোজার মতোই স্বাভাবিক নিয়ম মেনে এই ছয়টি রোজা রাখা যাবে।
২. রোজার শুরুতে সাহরী খাওয়া ও রোজা ভাঙার সময় ইফতার করা সুন্নত।
৩. রোজার সময় নিয়ম-কানুন মেনে চলা এবং আল্লাহর নিকট থেকে সওয়াবের প্রত্যাশা করা উচিত।
শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখলে রমজানের সওয়াবের সঙ্গে সঙ্গে অগণিত পাপের মাফি ও বরকত লাভের সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়। রমজানের শিক্ষা ধারণ করে আধ্যাত্মিক জীবন সমৃদ্ধ করার জন্য এই নফল রোজা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এস