সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
গাইবান্ধায় বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় মুক্তবুদ্ধি-মুক্তচর্চা, দার্শনিক, লেখক, বিজ্ঞানমনস্ক ও প্রগতিশীল চিন্তার মানুষ অধ্যাপক আবদুল কাদির মিয়া মারা গেছেন।
রবিবার (২৩ জুন) সকালে তাঁর বড় ভাই বীরমুক্তিযোদ্ধা আলী আকবর মিয়া প্রতিবেদককে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শনিবার (২২ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে শহরের সুন্দরজাহান মোড় এলাকায় এতিমখানার সামনে একটি বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় অধ্যাপক কাদির মিয়া আহত হন। তাকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে নেওয়ার পথেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বীরমুক্তিযোদ্ধা আলী আকবর মিয়া আরো জানান, রবিবার (২৩ জুন) বাদ জোহর তাঁর নিজ গ্রাম সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের জগৎ রায় গোপালপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হবে।
অধ্যাপক আবদুল কাদিরের মৃত্যুতে গাইবান্ধার সামাজিক, মুক্তচর্চা ও প্রগতিশীল অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জানা গেছে, অধ্যাপক আবদুল কাদির জন্ম ১৯৫৫ সালের ৮ ডিসেম্বর। ভারতের পশ্চিম বঙ্গের কুচবিহার জেলাস্থ দিনহাটা মহকুমায়। দিনহাটা শনি দেবী জৈন হাই স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবার পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রংপুর জেলাস্থ গাইবান্ধা মহকুমার মডেল হাই স্কুলে ১৯৬৮৮ সালে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৭২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে গাইবান্ধা কলেজে ভর্তি হন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৭৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে বি.এ. অনার্সে ভর্তি হন। ১৯৮১ সালে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর গাইবান্ধা আদর্শ কলেজে দর্শন বিভাগে প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন অধ্যাপক আবদুল কাদির।
১৯৮৮ সালে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে চাঁদপুর সরকারি কলেজে যোগদান করেন তিনি। পরে বদলি হয়ে গাইবান্ধা সরকারি মহিলা কলেজ ও গাইবান্ধা সরকারি কলেজে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করার পর রংপুর কারমাইকেল কলেজে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। তাঁর আগ্রহের বিষয় ছিল অধ্যয়ন, অধ্যাপনা, গবেষণা ও লেখালেখি করা। তিনি লোকায়ত, দর্শন ও প্রগতি, বিজ্ঞান চেতনা, সমাজ চেতনা ইত্যাদি গবেষণামূলক পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন।
এছাড়াও নারী জাগরনের জন্য তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন রোকেয়া পরিষদ। বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষার জন্য বিদ্যাবিথীকা নামে একটি শিক্ষালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন বিজ্ঞান একাডেমি।
‘শিক্ষাসূত্র ও শিক্ষাজীবন’ এবং ‘প্রকৃতিবাদ ও মানবজীবন’ নামে দুইটি গবেষণা ধর্মী বই তিনি লিখেছেন।
এমএ