সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
স্কুল জীবনে যেসব শিশু রাগ বেশি দেখায় তারাই জীবনে বেশি উন্নতি করতে পারে। মধ্যজীবনে অন্যদের তুলনায় তারাই বেশি আয় করে। এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। দীর্ঘ পাঁচ দশক এই গবেষণাটি চালানো হয়। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
প্রতিবেদনে ব্রিটিশ গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, ইউনিভার্সিটি অব এসেক্সের ইন্সটিটিউট ফর সোশ্যাল অ্যান্ড ইকোনোমিক রিসার্চ এই গবেষণাটি চালিয়েছে। গবেষকরা বলছেন, স্কুলের দুষ্টু বা জেদি শিক্ষার্থীরাই ভালো চাকরি পায় ও কর্মক্ষেত্রে ভালো করে।
১৯৭০ সালে জন্ম নেওয়া এমন সাত হাজার মানুষের তথ্য এই নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদনটি করা হয়েছে। গবেষণা দলটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তা যাচাই-বাছাই করেছে। ১৯৮০ সালে ১০ বছর বয়স হয়েছে এমন শিশুদের সামাজিক ও মানসিক দক্ষতার মূল্যায়ন করেছে তারা। ২০১৬ সালে এসে ওসব শিশুদের বয়স ৪৬ হলেও তাদের বর্তমান অবস্থা শিশু জীবনের সঙ্গ মিলে যায় বলে জানিয়েছে গবেষকরা।
এই গবেষণা প্রতিবেদনের সহলেখক অধ্যাপক এমিলিয়া ডেল বোনো বলেন, আমরা যেমনটা ধারণা করেছিলাম সেটাই হয়েছে। মনোযোগ ও মানসিক অস্থিরতা ছিল এমন শিক্ষার্থীরা বর্তমানে কম আয় করছে। তবে, আমরা অবাক হয়েছি জেদি শিক্ষার্থীদের নিয়ে। তারা অনেক বেশি আয় করতে পারছে। তিনি আরও জানান, আমাদের শ্রেণিকক্ষগুলো প্রতিযোগিতামূলক জায়গা। শিশুরা আগ্রাসনের সঙ্গে সেই প্রতিযোগিতায় জয়ী হওয়ার জন্য নিজেদের মানিয়ে নেয়। এই প্রতিযোগিতা তাদের কর্মক্ষেত্রের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে সেরা বেতনের চাকরির জন্য আক্রমণাত্মকভাবে প্রতিযোগিতা চালিয়ে যায় তারা। এমিলিয়া ডেল বোনো বলেন, সামাজিক-মানসিক দক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ তা নীতিনির্ধারকদের স্বীকার করা উচিত। স্কুলে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বাড়াতে তাদের সমর্থন করা প্রয়োজন।
ডেল বোনো ছাড়াও এই গবেষণায় কাজ করেছেন বেন ইথারিজ ও পল গার্সিয়া। স্কুলে শিশুদের আচরণ সম্পর্কে শিক্ষকদের কাছে ৬০টিরও বেশি প্রশ্ন করেছেন তারা। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কুলের নিয়ম অমান্যকারী শিশুরা, সহপাঠীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা বা জেদি শিশুরা ২০১৬ সালে এসে চার শতাংশ বেশি আয় করছে। মেয়েদের ক্ষেত্রে এই আয় ছয় শতাংশ বেশি। এ ছাড়া ক্লাসরুমে মনোযোগ দিতে না পারারা, কাজ শেষ করতে না পারারা ও যাদের মানসিক সমস্যা ছিল তারা অন্যদের তুলনায় কম আয় করছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দুষ্টু বা জেদি শিক্ষার্থীরা ১৬ বছর বয়সেই সামাজিক হয়ে উঠে। অনেকে আবার ধূমপানও করে। জীবনের সেই পর্যায়ে অনেকে বিভিন্ন অপকর্মের জন্য গ্রেপ্তারও হয়। ডেল বোনো বলেন, শিশুদের আচরণ নিয়ে মানুষের যে প্রত্যাশা ছিল তাতে ১৯৮০ দশকে পরিবর্তন আসে। আমাদের গবেষণায় অংশ নেওয়া অনেকে তখন পড়ালেখা ছেড়ে দেয়। দুষ্টু বা রাগ বেশি এমন শিক্ষার্থীদের আমরা বেশি হারেয়েছি।
দুষ্টুমির জন্য স্কুল থেকে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষার্থীরাও জীবনে সফল হয়েছে। এমনকি, সফল মানুষেরাও স্কুলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেন উইনস্টন চার্চিলও। এর মানে এই নয় যে অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের জেদ বা দুষ্টুমির জন্য অনুপ্রাণিত করবে। ডেল বোনো বলেন, আমি মনে করি সন্তানদের আক্রমনাত্মক হওয়ার পরিবর্তে তাদের মাটিতে দাঁড়াতে উত্সাহিত করা প্রয়োজন।
এম