সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
তাঁবু করে ফিলিস্তিনের দক্ষিণাঞ্চলের শহর রাফাহতে অবস্থান করছেন উম জাকি। ছয় সন্তানের এই মা স্টভে পোরিজ রান্না করছেন। এই মা বলেন, ‘নারী দিবস কি।’ তার কাছে এই দিবসটি নিষ্ঠুর রসিকতা ছাড়া কিছুই না।
ফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লন্ডনভিত্তিক সংবাদ সংস্থাটিকে উম জাকি বলেন, ‘এখন আমাদের প্রতিদিনের অবস্থা এক। প্রতিদিনের কাজও একই। যুদ্ধের কারণে উৎসবের দিন, আনন্দের উপলক্ষ, সুন্দর খাবার, হাসি ও আশা সবই শেষ হয়ে গেছে। নারী দিবস কি? আমরা ন্যূনতম অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমরা বেঁচে থাকা থেকে বঞ্চিত। প্রতিদিন ইসরায়েলি বোমার আঘাতে নারীরা মারা যায়।’
৮ মার্চ ছিল আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বের সমস্ত দেশের মতো ফিলিস্তিনেও দিনটি পালিত হয়েছিল। দিবসটি উপলক্ষে দেশটিতে সরকারি ছুটি ছিল।
আগের বছরগুলোতে নারী দিবসের দিনটি পালিত হতো জাঁকজমকভাবে। দিনটিতে নতুন বস্ত্র পরিধান করে বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরায় যেত ফিলিস্তিনের নারীরা। তবে, বর্তমানের অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার ২৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জীবন রক্ষার্থে বেগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। তাদের এই কষ্টের সময়ে দিবসের কথা চিন্তা করা উপহাসের সমান।
উম জাকি বলেন, ‘অন্যসব বছরগুলোতে নারী দিবসের দিনে আমি মেকাপ করি। পরিবারের জন্য মজাদার খাবার রান্না করি। তবে, যুদ্ধ আমাদের সব পাল্টে দিয়েছে। খোলা আকাশের নিচে রান্না করে আমার মুখ কালচে হয়ে গেছে।’ ঠিক সে সময়ে আরেক নারী কান্না করে বলে উঠেন, ‘নারী দিবস! গাজায় কোনো দিবস নেই। ইসরায়েলের কারণে আমরা কেয়ামতের কাছে রয়েছি।’
নারী দিবস উপলক্ষে একটি বিবৃতি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তারা জানিয়েছে, গাজার ৬০ হাজার গর্ভবতী পুষ্টিহীনতা ও পানি শূন্যতায় ভুগছে।’ ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ ও বাস্তুচ্যুতির মধ্যেই গাজায় প্রতি মাসে পাঁচ হাজার গর্ভবতী মহিলা সন্তান প্রসব করেছে।’
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলের অনবরত হামলায় উপত্যকাটিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ হাজার ৮৭৮ জন। এর মধ্যে ৯ হাজারই নারী। আর ১৩ হাজার শিশু। নিহতের সংখ্যা আরও বেশি জানিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে চাপা পড়ে মারা গেছে। তাদের নিহতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
উপত্যকাটি জুড়ে তীব্র ক্ষুধা ছড়িয়ে পড়েছে। কার্যত কোনো খাবার পাওয়া যাচ্ছে না। এতে করে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে মা ও শিশুরা।
সূত্র : রয়টার্স
এম