সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
মানিকগঞ্জে খান বাহাদুর আওলাদ হোসেন খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মজিদ মোল্লার পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করেছে শিক্ষার্থী এবং ছাত্র প্রতিনিধিরা। এ সময় প্রধান শিক্ষককে দেখে ধাওয়া দেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে শহরের খান বাহাদুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে আসলে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের নিকট প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি অনিয়ম এবং ছাত্রীদের শারীরিক হেনস্থার প্রতিবাদে সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এ সময় জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ওমর ফারুক, মেহেরাব, নাসিম, রমজান মাহমুদ, বিদ্যালয়টির প্রাক্তন শিক্ষার্থী ফাহারিয়াজ আলম ফাহিম, রবিউল ইসলাম, ফাহাদ, অনিক, আকাশ, আংশিক মোল্লা, সিয়াম মোল্লা, সাব্বির, সাদিয়া, রিয়া, আঞ্জুমানসহ দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে দুর্নীতি দমন কমিশন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, পরীক্ষায় ইচ্ছাকৃত অকৃতকার্য দেখিয়ে প্রত্যেক বিষয়ে নিয়মবহির্ভূত টাকা আদায় করেন তিনি। বিদ্যালয় ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিক হেনস্তা করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরেই। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা প্রভাব বিস্তারকারী মজিদ মোল্লার এই অপকর্মের বিরুদ্ধে এর আগে আমরা কখনো কথা বলতে সাহস পাইনি। আমরা তার (প্রধান শিক্ষক) এই অপকর্মের তদন্ত এবং বিচার দাবি করছি। তার পদত্যাগ করা না পর্যন্ত আমরা শ্রেণিকক্ষে ফিরব না।
শিক্ষার্থীর আরও বলেন, মজিদ মোল্লা প্রধান শিক্ষক হয়ে আসার পর যতগুলো শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে প্রত্যেকের কাছ থেকেই তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা এখন আর গোপন নেই। নারী শিক্ষকদের দেওয়া হয়েছে অনৈতিক প্রস্তাব। আর রাজি না হলে করা হয়েছে বরখাস্ত। দারোয়ান, পিয়ন থেকে শিক্ষক সকলকেই চাকরিতে ঢুকতে ঘুষ দিতে হয়েছে মজিদ মোল্লাকে। একমাত্র তার কারণেই বিদ্যালয়টির পরিবেশ এবং পড়াশোনার মান নষ্ট হয়েছে।
ছাত্র প্রতিনিধি ওমর ফারুক বলেন, এই মজিদ মোল্লা দীর্ঘ একযুগে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ-লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অবৈধভাবে আত্মসাৎ করা টাকায় মানিকগঞ্জ শহরে আবাসিক সাত তলা ভবন, বেওথা এলাকায় ৫ শতাংশ জমি এবং ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরি এলাকায় ১৫ শতাংশ ভিটি জমি কিনেছেন। প্রতিষ্ঠানে তার অনিয়ম তদন্ত করে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের পাশাপাশি আমরাও সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি, যাতে করে প্রতিষ্ঠান প্রধান হয়ে এমন অনিয়ম দুর্নীতিতে কেউ আর না জড়াতে পারে। মেয়ে শিক্ষার্থীরা শারীরিক হেনস্থার কথা জানিয়েছেন। প্রশাসনের উচিত তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় এনে সঠিক বিচার করা। শিক্ষার্থীরা আজ রাস্তায় নেমে এসেছে। এই দুর্নীতিবাজ শিক্ষকের বিচার না হলে যেকোনো সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মজিদ মোল্লা বলেন, আমি কোনো দুর্নীতি করি নাই। তদন্তে যদি দোষী প্রমাণিত হই, তাহলে যে শাস্তি দেবে তা মাথা পেতে মেনে নেব।
অভিযোগের বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও বিদ্যালয়টির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, প্রধান শিক্ষক মজিদ মোল্লার বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অ