সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
স্বপ্ন সত্যি হলো না ফিলিস্তিনি কিশোর নাজি আল বাবা’র। ছয় ভাইবোনের মধ্যে পঞ্চম, নাজির ইচ্ছে ছিলো বড় হয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো ফুটবলার হবার। তবে মাত্র ১৪ বছর বয়সে থামতে হলো এই স্বপ্নবাজকে। দেশটির হালহুল শহরে ফুটবল খেলতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে প্রাণ হারিয়ে শুধু নাজি আল বাবার’র নয়, স্বপ্ন থমকে গেছে গোটা একটা পরিবারের।
ফুটবলকে ঘিরে ছিল নাজির রঙিন স্বপ্ন। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো বড় ফুটবলার হওয়ার আশায় দিন-রাত মেতে থাকত প্রিয় খেলায়। কিন্তু সব স্বপ্ন ধুলায় মিশে গেল মাত্র ১৪ বছর বয়সে। গত ৩ নভেম্বর অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফুটবল খেলার সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত হয় ফুটবল সপ্নবাজ কিশোর নাজি। অন্যান্য দিনের মতই বন্ধুদের নিয়ে খেলতে বেরিয়ে ছিল নাজি। কিছুক্ষণ পরেই তার চাচাতো ভাই খবর দেন যে ইসরায়েলি সেনারা ওই এলাকায় গুলি চালিয়েছে এবং নাজি আহত হয়েছেন। এ খবর শুনে নাজির বাবা নিদাল আল বাবা ও তার চাচা সামির দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সেনারা তাদেরকেও নির্মমভাবে মেরে ৪০ মিনিটেরও বেশি মাটিতে ফেলে রাখে। নাজির বাবা জানায় সেটি ছিল তার জীবনের সবচেয়ে কষ্টকর ৪০ মিনিট।
আমি একজন অফিসারকে সৈন্যদের নির্দেশ দিতে শুনেছিলাম যে, তারা যেন দুই দলে দাঁড়ায় – পাঁচজন ডান পাশে এবং একজন বাঁ পাশে, মৃতদেহটি বহন করার জন্য। তখনই আমি চিৎকার করতে শুরু করলাম: ‘আপনারা কীভাবে ১৪ বছরের একটি শিশুকে হত্যা করতে পারলেন? সে আপনাদের কী ক্ষতি করেছিল? সে আপনাদের কী ক্ষতি করেছিল?’
আহতের খবর শুনে নাজির পরিবার প্রথমে ভেবেছিল, নাজি শুধু আহত হয়েছে। পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপন এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযান বাড়ার পর থেকে এরকম অনেকেই আহত হয়েছে। এক পর্যায়ে সেনারা নাজির মৃতদেহ বহন করে নিয়ে এলে নাজির পিতা তাকে সনাক্ত করেন তার পছন্দের নতুন জুতা দেখে। নাজির শরীরে চারটি গুলি ছিল, যার মধ্যে একটি তার হার্টে এবং একটি পেলভিসে ছিল। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ৩০ মিনিট পর্যন্ত নাজিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।
নাজির এই মর্মান্তিক মৃত্যু গোটা ফুটবল দুনিয়াকেই শোকস্তব্ধ করেছে। নাজির ক্লাবের কোচ নাসের মেরিব জানান নাজি ডান পায়ে বেশি শক্তিশালী ছিল এবং তার হেড দেয়ার দক্ষতাও ছিল অসাধারন
“নাজি ছিল দুর্দান্ত প্রতিভাধর। ফুটবল নিয়ে ওর স্বপ্ন ছিল বড়। সে রোনালদোর মতো খেলোয়াড় হতে চেয়েছিল। কিন্তু চারটি গুলি সেই স্বপ্নকে হত্যা করল।
নাজির জানাজায় অংশ নেয় হাজারো মানুষ। বাবার ভাঙা হাত নিয়েও তিনি নিজেই কাঁধে নেন তার ছেলের মরদেহ । ফুটবল পায়ে মাঠ কাঁপানোর স্বপ্ন দেখা সেই ১৪ বছরের কিশোরকে শেষ বিদায় জানাতে চোখের জলে ভাসে পুরো গ্রাম। ইসরায়েলি সেনাদের এমন নির্মমতার সময়ের সাথে বেড়েই চলেছে। মৌলিক অধিকার এখন দেশটিতে বিলাসিতা, বাস্তবতা হচ্ছে দেশটির মানুষদের জীবনের নিশ্চিয়তা দিতে ব্যর্থ শান্তির বার্তা দিতে থাকা গোটা বিশ্ব।
কে