সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব ব্যক্তিদের মধ্যে বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসানীতি নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন নয় বলে জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে এ নিষেধাজ্ঞার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করছে বিএনপি। পাশাপাশি বিষয়টিকে সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক মহলের কোনো আস্থা না থাকার অংশ হিসেবে দেখছে দলটি।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, উই আর ভেরি হ্যাপি। আমেরিকা বলেছে যারা ইলেকশন বানচাল করার চেষ্টা করবে, তাদের শাস্তি দেবে, ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেবে, খুব ভালো। ভিসা নিষেধাজ্ঞাকে আমরা স্বাগত জানাই।
এদিকে ভিসা বিধিনিষেধ আসা নিয়ে সরকার চিন্তিত নয় বলেও মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারী ব্যক্তিদের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ যেসব বাংলাদেশির নাম এসেছে, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য সরকারকে জানায়নি যুক্তরাষ্ট্র। তবে দেশটি থেকে বাংলাদেশ সরকারকে দেওয়া ধারণা অনুযায়ী সংখ্যাটি বড় নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপকে ‘খুবই ভালো’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, আমি তো মনে করি এটা খুব ভালো। যারা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করবে তাদের বিরুদ্ধে তারা এই নীতি গ্রহণ করবে। আমরা সব সময় বলেছি এবং প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে তার বক্তব্যে বলেছেন, ফ্রি–ফেয়ার ইলেকশন তারা চায়, আমরাও চাই। যারা নির্বাচনে বাধা দেবে তাদের বিরুদ্ধে স্যাংশন হবে।
বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ভিসানীতির বিষয় নতুন না। এটা নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু আছে বলে মনে করি না।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের কারণে আজ বাংলাদেশ মার্কিন এই ভিসানীতির মধ্যে পড়ল।
শামা ওবায়েদ আরও বলেন, বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে তিন মাস আগে গত মে মাসে ভিসানীতি ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তাদের কাছে এখন মনে হয়েছে যে বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নেই। এ জন্যই তারা ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন আয়োজন নিয়ে বাংলাদেশের যে লক্ষ্য তাকে সমর্থন করতেই আজকের এই পদক্ষেপ। এছাড়া যারা বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায় তাদের সমর্থন করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। এর আগে গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র।
এফএইচ