সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
আমরা অনেকেই ধারণা করি গরুর মাংস খেলেই বুঝি শরীরের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। গরুর মাংসে প্রচুর কলেস্ট্ররেল থাকায় অনেকেই এটি এড়িয়ে চলে। পুষ্টিবিদদের মতে গরুর মাংসে যেমন ক্ষতিকর দিক আছে তেমনি এই মাংস শরীরের অনেক উপকারেও আসে। কেননা গরুর মাংসে যতগুলো পুষ্টি গুন আছে তা অন্য কোনো খাবার থেকে পাওয়া এক্টু কঠিন হয়ে যায়। এখন এই মাংস আপনার জন্য ক্ষতিকর হবে নাকি উপকারি তা নির্ভর করবে আপনি কতটুকু নিয়ম মেনে খাচ্ছেন ও কি পরিমানে খাচ্ছেন?
গরুর মাংসে রয়েছে আমাদের শরীরের জন্য প্রয়জনীয় প্রটিন, ভিটামিন, খনিজ উপাদান বা মিনারেলস যেমন, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম,ফসফরাস, আয়রন। আবার ভিটামিনের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি২, বি৩,বি৬ ও বি১২। আর এই উপাদানগুলো দেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি দাত ও হারের গঠনে ভুমিকা রাখে। শুধু তাই নয় ত্বক, চুল ও নখের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। শরীরের বৃদ্ধি ও বুদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে। ক্ষত নিরাময় ও দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। অতিরিক্ত ক্লান্তি দূর করে শরীরকে কর্মোদ্যম রাখে।
এ ছাড়াও ডায়রিয়া ও রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে। আবার শরীরে শক্তি যোগান দেয়, অবসাদ, মানসিক বিভ্রান্তি বা হতাশা দূর করে।
গরুর মাংসে রয়েছে প্রচুর পরিমানে প্রটিন। মগজ ও কলিজায় প্রটিন থাকলেও সেটার পরিমান কম বরং এর বেশিরভাগ জুরেই রয়েছে কোলেস্টেরল।
পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিনের প্রটিনের চাহিদা নির্ভর করে একজন মানুষের ওজনের উপর। আবার মেয়েদের মাসিক চলাকালীন বা গর্ভবতী অবস্থায় স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ পরিমান প্রটিন প্রয়োজন। ব্রিটেনের সাস্থসেবা বিভাগ জানায়, প্রতিদিন ৭০ গ্রামের বেশি ও সপ্তাহে ৫০০ গ্রামের বেশি প্রটিন খাওয়া উচিৎ নয়।
কখনই প্রতিদিন একটানা গরুর মাংস খাবেন না। পুষ্টিবিদদের মতে গরুর মাংসের নিরাপদ মাত্রা হল সপ্তাহে দুইদিন। তবে আপনি যদি হ্রদরোগ, হাইপার টেনশন, ডায়াবেটিস বা কিডনি রোগে আক্রান্ত হন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।
একটি মুরগির ডিমের কুসুমে ১৯০ মিলিগ্রাম ভালো কোলেস্টেরল থাকে যা চর্বি ছাড়া ২১০ গ্রাম গরুর মাংসের সমান। সুতরাং গরুর মাংস মানেই যে অনেক বেশি কোলেস্টেরল এই ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
গরুর মাংস কতটা নিরাপদ তা নির্ভর করে আপনি সেটা কিভাবে রান্না করছেন তার ওপর। গরুর দুটি অংশে চর্বির পরিমান বেশি থাকে। একটি হল গরুর পেছনের রানের উপরের ফোলা অংশের মাংস ও পেছনের দিকের উপরের অংশের মাংস । তবে মাংসের বাইরে যে চর্বি লেগে থাকে তা কেটে ফেলে দিলে কোলেস্টেরলের পরিমান অনেক অংশেই কমিয়ে আনা যায়।
মাংস ভালো করে ধুয়ে পানিতে সেদ্ধ করলে চর্বির স্তর উপরে উঠে আসে। মাংস কিছুক্ষন ফোটানোর পর পানিটা ফেলে দিতে পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে এতে মাংসে থাকা চর্বির পাশপাশি ভিটামিন ও মিনারেলসও বেরিয়ে যায়। মাংসে থাকা ফ্যাট আরও কমাতে ভিনেগার, লেবুর রস, বা টক দই দিয়ে রান্না করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদেরা।
গরুর মাংস বেশি তেল ও মসলা দিয়ে কসিয়ে রান্না না করাই ভালো। এর থেকে ভালো ঝোল ঝোল করে রান্না করা ও খাবার সময় ঝোল এড়িয়ে খাওয়াই ভালো। এছাড়াও গরুর মাংস গ্রিল করে খেলে চর্বি অনেকটাই কমে যায়।
এস