সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সোমেশ্বরী নদীপারের ভারত সীমান্তবর্তী ভবানীপুর গ্রামের প্রায় আড়াই হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন কাঠের সেতুটি ভেঙে গেছে। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সেতুটি পাহাড়ি ঢলে আসা পানির তোড়ে ভেঙে যায়। এতে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ওই গ্রামের মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী অঞ্চলের এই ভবানীপুর গ্রামে যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসছে গারো ও হাজংরা। কিছু বাঙালির ঘরও আছে। এই কাঠের সেতুই গ্রামটির বাসিন্দাদের উপজেলার অন্য অংশে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। পূর্বে এখানকার মানুষের যাতায়াতের জন্য একটি স্থায়ী পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে সেটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরপর সোমেশ্বরী নদীরপারের পাহাড়ি ছড়ার ওপর কাঠ-বাঁশ দিয়ে তৈরি সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে ওই গ্রামের বাসিন্দারা। বর্তমানে এটিও ভেঙে পড়ায় যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
নদীর এপার থেকে কথা হয় ওই গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে। রহমত মিয়া বলেন, ‘যাতায়াতের একমাত্র কাঠের সেতুটি ভেঙে গেছে, যার কারণে শহরসহ গ্রামীণ হাটবাজারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।’
চিত্রা সাংমা নামের গ্রামটির আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ায় আমরা খুবই বিপাকে পড়েছি। যত দিন না এখানে সেতু নির্মাণ হবে, তত দিন শহরে যেতে পারব না। তাই আমাদের যাতায়াতের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’
স্থানীয় কৃষক হাশেম মিয়া বলেন, ‘চলাচলের একমাত্র সেতুটি ভেঙে পড়ায় কৃষি ও গবাদিপশু নিয়ে কৃষকদেরও বিপাকে পড়তে হচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাদেকুল ইসলাম বলেন, কাঠের সেতুটি ভেঙে পড়ায় ওই পাড়ের মানুষ খুবই দুর্ভোগে পড়েছে। ইউএনও স্যার পরিদর্শন করেছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. খোয়াজুর রহমান বলেন, বর্ডারের আইন রয়েছে, সীমান্তের ১৫০ গজের ভেতরে স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা যায় না। তবে জিরো পয়েন্টের বটতলা স্থানে পূর্বের ভেঙে যাওয়া সেতুর নদীর পাড় বাঁধাইয়ের কাজ করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এরপর জিরো পয়েন্টের ১৫০ গজ দূরত্বে রাস্তা হয়ে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, ‘সেতুটি মঙ্গলবার বিকেলে পরিদর্শন করেছি। সেতুটি পাহাড়ি নদীর পানির স্রোতে ভেঙে ওই গ্রামের মানুষের শহরে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। স্রোতের জন্য প্রাথমিকভাবে নৌকা চলাচলের ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘পানির স্রোত কমলেই সেতুটি মেরামত করা হবে। এ ছাড়াও সেখানে একটি স্থায়ী সেতুটি নির্মাণের জন্য এলজিইডির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
জেবি