দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
নিয়ম না থাকলেও নেত্রকোনার কেন্দুয়া সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নাশকতা মামলার আসামি শফিকুল আলম খসরু নামে এক শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে ফেসবুকসহ স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নাশকতার মামলার আসামি হওয়ার পরও আওয়ামী পন্থী শিক্ষক শফিকুল আলমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আলোচনা ছড়িয়ে পড়েছে।
এর আগে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি সকালে মামলার তথ্য গোপন করে শফিকুল আলম খসরু নামে ওই শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ বাগিয়ে নেন। অবশ্য মামলার বিষয়টি জানাজানির পর একই দিন বিকেলে ওই নিয়োগ আদেশটি বাতিলও করা হয়।
সম্প্রতি নাশকতা মামলার আসামি শফিকুল আলম খসরু পুনরায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেয়েছেন বলে মৌখিকভাবে দাবি করেন তিনি। তবে নিয়োগ আদেশের কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি। এছাড়া তার নিয়োগের খবরটি জানাজানি হলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী শফিকুল আলম খসরুকে অভিনন্দন জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন। এতে ওই শিক্ষক যে আওয়ামী লীগ পন্থী তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।
এদিকে নিয়ম মোতাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
নিয়মানুযায়ী- কোনো শিক্ষক ফৌজদারি মামালার আসামি হলে তিনি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর কেন্দুয়া সরকারি কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক শফিকুল আলম খসরুর বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা হয়। নাশকতার মামলা থাকায় নিয়ম অনুযায়ী কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক শফিকুল আলম খসরু ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছেন। ফলে দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পাওয়ার কথা। কিন্তু মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ও মামলার তথ্য গোপন করে শফিকুল আলম গত ৪ ফেব্রুয়ারি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ বাগিয়ে নেন। পরে জানাজানি হলে তা বাতিল করা হয়। তবে এবার বড় লবিং তদবিরে ফের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ পেয়েছেন বলে এলাকায় প্রচার করে যাচ্ছেন।
কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, শিক্ষক শফিকুল আলম খসরু আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে উঠাবসা করতেন। আওয়ামী পন্থী শিক্ষক হিসেবেই পরিচিত তিনি। সেই পরিচয় ব্যবহার করে বিগত সময়ে নানান সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন। কলেজের আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ক্ষমতার দাপটে বিরোধীদের ওপর প্রভাব বিস্তারসহ নানাভাবে অত্যাচারও করেছেন। গত ৫ আগস্টের পর তার বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা হয়েছে। তারপরও তথ্য গোপন করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ বাগিয়ে নেন। অবাক করা বিষয় হলো- মোটা অংকের টাকা ছিটিয়ে বর্তমান সময়েও তিনি আওয়ামী আমলের মতো প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন। আমরা চাই নিয়মানুযায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ হোক।
কেন্দুয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওমর কাইয়ুম শিক্ষক শফিকুল আলম খসরুর বিরুদ্ধে থাকা নাশকতার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক শফিকুল আলম খসরু বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছেন কর্তপক্ষ। এর আগে নিয়োগ পেলেও একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। এর প্রেক্ষিতে পরে মাউসি কর্তৃপক্ষ তদন্ত শেষে ফের আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ করেছেন। এদিকে মামলার বাদী এফিডেভিট জমা দিয়েছেন। এ বিষয়ে আর কোনো সমস্যা নাই।
আরএ