সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
বগুড়ায় রথযাত্রার দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। কমিটিকে আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
রোববার (৭ জুলাই) রাতেই গঠিত এই তদন্ত কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পি এস ইমরুল কায়েসকে। এছাড়াও পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, নেসকো, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল সার্জনের প্রতিনিধিকে কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার কারণ এবং এই ঘটনায় কারো গাফিলতি ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখতে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে তদন্ত কমিটিকে।
এদিকে, সোমবার সকালে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, দুর্ঘটনা আহতদের মধ্যে আইসিইউতে থাকা ২ জনকে ইতোমধ্যে ঢাকায় পাঠানো হয়ছে। সোমবার ২ জন ছাড়পত্র নেওয়ার পর এখনও শজিমেক হাসপাতালে ৩৬ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া রোববার ৩ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
অন্যদিকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ৫ জন ভর্তি ছিলেন। যার মাঝে জলি সাহা নামে এক নারী মারা যান ঘটনার দিনই। বাকিরা অন্যত্র চিকিৎসা নিতে চলে গেছে। এ নিয়ে রথযাত্রা ট্রাজেডিতে মোট আহত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৪৫ জন। তবে এই তথ্য শুধুমাত্র যারা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তাদের পরিসংখ্যান। এর বাইরেও এ ঘটনায় আহত অনেকেই স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিক এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রেও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
নেসকো-১ এর সংশ্লিষ্টরা জানান, সেউজগাড়ি আমতলা মোড়ে ১১ হাজার ভোল্টেজের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ছিল। নেসকো বৈদ্যুতিক খুঁটির তারের উচ্চতা ১২ মিটার। এর উপরে কোনো ধাতব পদার্থের সঙ্গে সংস্পর্শ লাগলে দুর্ঘটনা ঘটবে। রথের উচ্চতা ছিল প্রায় ১২ মিটারের। আর রথের উপরিভাগে লোহার কোন দণ্ড ছিল। এই ধাতব পদার্থে সংস্পর্শে এসে গোটা রথ বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে। এ সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে রথযাত্রার আয়োজক ইসকন এবং নেতৃত্বে থাকা অধ্যক্ষ খরাজিতা কৃষ্ণ দাসের আয়োজনের ক্ষেত্রে নানা ত্রুটি সামনে আসতে থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, প্রতি বছর রথ আজিজুল হক কলেজ থেকে সাতমাথাগামী সড়কে রেখে সেখানে জগন্নাথ দেবকে স্থাপন করা হয়। কিন্তু এ বছর বিপরীত রাস্তায় রথ রেখে প্রথম ভুল করেছে ইসকন। শুধু তাই নয় রথের উচ্চতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। বলছেন আমতলা মোড় ঘোরার সময় রথের উপরে সঞ্চালনার দায়িত্বপ্রাপ্তরা বৈদ্যুতিক তার দেখেও গম্বুজ কেন নিচে নামালো না?
তারা আরও বলেন, রথযাত্রার আগে প্রতি বছর আনুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন সভা সমাবেশের মাধ্যমে সমন্বয় সাধন হলেও এ বছর ইসকন এবং এর সংশ্লিষ্টরা নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন করেছে পুরো অনুষ্ঠানটি। এছাড়াও পুরো আয়োজনে শুরু থেকেই সর্বত্রই দেখা যায় বিশৃঙ্খলা। তবে দোষ যারই থাকুক এমন ঘটনার আর যেন কখনও পুনরাবৃত্তি না হয় এবং মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার পেছনে কারো গাফিলতি থাকলে তারও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন সকলে।
আরএ