সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
সূবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর অন্যায় আচরণ, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় সংবাদ সম্মেলনে একরামুল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণসহ সংসদ সদস্য পদ স্থগিত চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) নোয়াখালী প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী তার ছেলেকে অন্য উপজেলা থেকে এনে সুবর্ণচর উপজেলায় আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে প্রার্থী করিয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। একইসঙ্গে প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসন ও সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে অরাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা জেলা আওয়ামী লীগ তার এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে তার সংসদ সদস্য পদ স্থগিত ও দলের সভাপতির কাছে তার বহিষ্কার দাবি জানাচ্ছি ।
এ সময় সূবর্ণচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এইচ এম খায়রুল আনাম চৌধুরী বলেন, নির্বাচন চলাকালীন একরাম সাহেব নোয়াখালী পৌরসভার মেয়রের কক্ষে আমাকে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সামনে চরমভাবে অপমান করে এক পর্যায়ে তেড়ে আসে এবং হুমকি দেয় যে, সে আমাকে দেখে নিবে। আমি নাকি বহুত সুখে আছি সেটাও সে আমাকে ভরে দিবে। এই ধরনের অবস্থার প্রেক্ষিতে আমি দারুণভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি। সেজন্য আমি চিকিৎসাজনিত কারণে কিছুদিন ঢাকায় আবস্থান নিতে বাধ্য হই। কিন্তু মোবাইল ফোনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি যেন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকাকে বিজয়ী করতে সক্ষম হই এবং বিভিন্ন মিটিংয়ে মোবাইলে ভয়েস ম্যাসেজের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করি।
তিনি আরও বলেন, একরাম সাহেব আমার বিরুদ্ধে তার ছেলে সাবাব চৌধুরীকে তার নিজের উপজেলা কবিরহাট থেকে আমার উপজেলা সুবর্ণচরবে এনে ভোটার করে আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী করেছে। আমাকে অপমান ও জেলা আওয়ামী লীগকে অপমান করার জন্য। সে মনে করে যে, দল তার বিরুদ্ধে কোনো অবস্থান নিবে না যেহেতু সে এমপি।
একরামুল চৌধুরী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সুবর্ণচরের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে, হামলা করছে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে অনেককে গ্রেপ্তার করছে। আমাকে পাবলিক মিটিংয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছে। এমনকি তার ছেলেকে ভোট না দিলে এলাকার উন্নয়ন বন্ধ করে দিবে বলেছে। এক কথায় সে সুবর্ণচরের অসহায় নিরীহ জনপদের মানুষের উপর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। আমরা আপনাদের মাধ্যমে এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
একরামুল করিম চৌধুরীর ক্ষমতার প্রভাব সম্পর্কে বলেন, সে তার অঢেল টাকা, পেশীশক্তি এবং এমপির ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও কুৎসা রটনা করছে। আমাকে যা তা ভাষায় গালাগালি করছে। যা রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বহির্ভূত। আমি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এমন শিষ্ঠাচার বহির্ভূত আচরণের জন্য আপনাদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ থাকবে অতি দ্রুত উনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
উল্লেখ্য, সংবাদ সম্মেলনে একরামুল করিম চৌধুরী বিগত সময়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করে নেতিবাচক মন্তব্য করায় তা তুলে ধরে বক্তারা বলেন, তিনি ২০০১ সালের নির্বাচনে নোয়াখালীর গর্ব জনাব কাদের সাহেবকে নির্বাচনে পরাজিত করা নিয়ে কাজ করেন। কাদের সাহেব সম্পর্কে কটূক্তি, অকথ্য গালিগালাজসহ মাতাল অবস্থায় পাবলিক মিটিংয়ে বলেছে, কাদের সাহেবের কোনো বেইল নাই। কাদের সাহেব একজন ঘৃণিত ব্যক্তি। উনি রাজাকার পরিবারে জন্ম নিয়েছেন। গত আহ্বায়ক কমিটির সময় বলেছে একরাম ও তার পরিবারের কেউ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত নাই। এছাড়া ইউনিয়ন নির্বাচন এবং পৌরসভার নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং নৌকার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখেন, নৌকার বিরুদ্ধে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে জয়ী করানোর পক্ষে কাজ করেন।
জেবি