সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নিজের ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, নোয়াখালী-৪ (সদর-সূবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) নোয়াখালীর সূবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শিউলী একরাম বাজারে একটি পথসভায় স্থানীয় ভোটাদের উদ্দেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে এমপি একরাম ওই ঘোষণা দেন।
ওই বক্তব্য স্থানীয়দের অনেকেই মুঠোফোনে ধারণ করেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। সংসদ সদস্যের এ ঘোষণা নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর একমাত্র ছেলে আতাহার ইশরাক সাবাব চৌধুরী। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টানা তিন বারসহ বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম।
জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় অন্তঃকোন্দলে জের ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আনম সেলিমের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী তার ছেলেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করিয়েছেন বলে দলের নেতাকর্মীরা মনে করেন।
মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের শিউলী একরাম বাজারে দেওয়া ওই বক্তব্যের একটি অংশে উল্লেখ করেন, যে এলাকা থেকে ভোট কম দেবেন, সে এলাকায় আমি কোনো উন্নয়নে হাত দেব না। স্ব স্ব এলাকা। গিভ অ্যান্ড টেক। আমাকে দিবেন, আমি আপনাদের দিব। আমারে এমপি বানাইছেন, আমি তো বলছি, ৫ বছর ক্ষমতায় আছি, এখন আমার মন মতো উপজেলা চেয়ারম্যান যদি বানান, আমার মিডেলম্যান (মাঝের ব্যক্তি) আমি আপনাদের উপহার দিয়ে গেলাম। আপনাদের আমি আজ এখানে এসে দাঁড়িয়ে কথা বলছি। পরে এখানের যেকোনো একটি দোকানে বসে আপনাদের সঙ্গে সুখ-দুঃখের কথা বলব।
সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর এমন বক্তব্য নিন্দনীয় বলে উল্লেখ করেছেন তার ছেলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম।
খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম বলেন, নির্বাচনে ভোটারেরা যে প্রার্থীকে পছন্দ করবেন তাকে ভোট দিবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তার মতো একজন ব্যক্তি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ভোটারদের এলাকায় উন্নয়ন না করার হুমকি-ধমকি দেওয়া মোটেই সমিচীন নয়। শুধু উন্নয়ন না করার হুমকিই নয়, সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করে ভোটারদের আরও নানা হুমকি দিচ্ছেন। তিনি এসব হুমকির বক্তব্যের ভিডিওসহ নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান।
ভোট না দিলে উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকির বিষয়ে সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, ভোটারদের উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তিনি কোনো বক্তব্য দেননি। এলাকার উন্নয়ন নিয়ে দেওয়া তার বক্তব্যের কোনো একটি অংশকে কাটাছেঁড়া করে এডিট করে কেউ তা উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রচার করছে। তাছাড়া তার ছেলেকে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী করাননি। তার ছেলে একজন ব্যবসায়ী। এলাকার জনগণ জোর করে তাকে প্রার্থী করিয়েছে। সে এমনিতেই জিতবে। সংসদ সদস্য নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করার বিষয়ে জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা নওয়াবুল ইসলাম জানান, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন পার হলেই কাউকে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে গণ্য করা হয়। এখনও সময় শেষ হয়নি। তার আগে সংসদ সদস্য তার পরিবারের সদস্য হিসেবে তাকে পরিচয় করিয়ে দিতে পারেন। তবে সুবর্ণচরে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনের পর সংসদ সদস্যকে ছেলের পক্ষে মাঠে নামতে দেওয়া হবে না।
জেবি