সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টার মামলা করায় ভুক্তভোগী একটি পরিবারকে একঘরে করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান বা ইউপি সদস্যকে অবগত করলেও তারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এ অবস্থায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ঐ ভুক্তভোগী পরিবারটি।
এমনই ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের পাহাড়ভাঙ্গা উত্তর কুড়ালিপাড়া গ্রামে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাদীর বাড়ির পশ্চিম পাশে যাতায়াতের রাস্তা; সেই রাস্তাটি আসামিপক্ষের লোকজন বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে রেখেছে। এর ফলে বাদীর পরিবারের লোকজনসহ স্থানীয় কয়েকটি পরিবাররে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়ে বর্তমানে বিকল্প পথ হিসেবে তারা ক্ষেতের উপর দিয়ে যাতায়াত করছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৬ জানুয়ারি বিকেলে গাছ থেকে পেঁয়ারা পেরে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থীকে বাড়িতে ডেকে নেয় প্রতিবেশী কিশোর ১৭ বছর বয়সী ওমর ফারুক। এরপর ঘরে নিয়ে গিয়ে ঐ শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ফারুক। পরে ঐ শিশুটি বাড়িতে ফিরে এসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে পরিবারের লোকজনকে বিষয়টি অবগত করে।
এ ঘটনায় ১৮ জানুয়ারি কিশোর ওমর ফারুককে আসামি করে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করে শিশুটির বাবা।
পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ওমর ফারুককে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। আদালতে ঐ শিশু শিক্ষার্থী ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার বর্ণনাও করেছেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, মামলার আসামি ১৭ বছর বয়সী ওমর ফারুক জামিনে কারাগার থেকে বেড়িয়ে আসার পরপরই তার পরিবারের লোকজন ভুক্তভোগী ঐ পরিবারকে মামলাটি আপসের জন্য চাপপ্রয়োগ করতে থাকে। ভুক্তভোগী ঐ পরিবার আপসে রাজি না হলে তাদের চলাচলের সকল রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে একঘরে করে রেখে দিয়েছে আসামিপক্ষের লোকজন।
নির্যাতিত শিশুটির মা বলেন, আসামিপক্ষের লোকজন মামলা আপসের জন্য চাপপ্রয়োগ করছে। আপসে রাজি না হলে তারা আমাদের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে একঘর করে রেখেছে। আমি এর বিচার চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা গৃহবধূ শিরিন বলেন, ওদের দুই পরিবারের মধ্যে শিশু ধর্ষণ চেষ্টার মামলা নিয়ে বিরোধ চলছে; এখন আসামির লোকজন রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে বাদীর পরিবারসহ আমাদের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা চাই রাস্তা খুলে দেওয়া হোক।
মামলার বাদী বলেন, বিভিন্নভাবে আসামির লোকজন মামলাটি আপসের জন্য চাপ দিচ্ছে ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তাদের প্রস্তাবে সাড়া না দিলে আমাদের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে আসামিপক্ষের লোকজন। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে জানালেও তারা কোন ধরনের প্রদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
এদিকে মামলার আসামির মা হোসনে আরা বেগম ও চাচা মো. কাইয়ুম বলেন, আমাদের ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তারা আমাদের পরিবারের অন্য সদস্যদের নামেও মামলা করতে পারে; এজন্য তাদের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
চিলারং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফজলুল হক বলেন, মামলার বাদী আমাকে জানিয়েছে তাদের যাতায়াতের রাস্তা আসামির লোকজন বন্ধ করে দিয়েছে। বিষয়টি আমরা দেখছি; রাস্তা খুলে না দিলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি; অভিযোগ পেলে বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হবে।
জেবি