সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
নরসিংদীর শিবপুরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির জন্য জয়া নামে ষষ্ঠ শ্রেণির এক অসুস্থ ছাত্রীকে ২০০বার কান ধরে উঠবস করার নির্দেশ দেন শিক্ষক।
শিক্ষকের কথা মতো ৬১ বার কানে উঠবস করার পর শ্রেণিকক্ষেই অচেতন হয়ে পড়েন জয়া। পরে সহপাঠীরা তাকে মাথায় পানি ঢেলে সুস্থ করেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার দুপুরে উপজেলার কামরাব উচ্চ বিদ্যালয়ে।
মঙ্গলবার এ ব্যাপারে ছাত্রীর মামা মো. মহসিন মিয়া শিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে কামরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামান ও কম্পিউটার অপারেটর আসিফুল ইসলামের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কামরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী জয়া অসুস্থতার কারণে ৩ দিন স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন। রোববার জয়ার জ্বর কিছুটা কমলেও পুরোপুরি সুস্থ না হয়েই সকালে সে স্কুলে আসে। ওইদিন প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামানের নির্দেশে বিদ্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর আসিফুল ইসলাম প্রথম ক্লাস গণিত বিষয়ে পাঠদানের জন্য আসেন। তিনি হাজিরা নেওয়ার সময় দেখেন জয়া তিন দিন ধরে অনুপস্থিত। তখন জয়া জ্বরের কারণে বিদ্যালয়ে আসতে পারেনি বলে জানায়। কিন্তু তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার কারণে তাকে ২০০ বার কান ধরে উঠবস করার নির্দেশ দেন। সঙ্গে ১০ টাকা করে চাঁদা দাবি করেন। সে ভয়ে কান ধরে উঠবস করা শুরু করে। ৬০ বার উঠবস করে সে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থতার কথা জানালে কম্পিউটার অপারেটর আসিফুল ধমক দিয়ে আরও ৫বার, মোট ২০৫ বার উঠবস করার জন্য বলে। তখন সে ৬১ বার উঠবস করে অচেতন হয়ে পড়ে যায়। পরবর্তীতে তার সহপাঠীরা মাথায় পানি ঢেলে জ্ঞান ফিরিয়ে আনে। তারপর সে বাড়ি চলে আসে।
জয়ার মামা মহসিন মিয়া বলেন, আমার ভাগ্নী অসুস্থ শরীর নিয়ে বিদ্যালয়ে যায়। কিন্তু তার কথা না শোনেই ওঠবস করার নির্দেশ দেয়। আর উঠবস করার সময় সে অচেতন হয়ে যায়। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের কাছে দুদিন ধরে অভিযোগ জানিয়েও প্রতিকার পাইনি। তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি আমার ভাগ্নীর নিরাপত্তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছি। তার নিরাপত্তাসহ বিবাদীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামান বলেন, অসুস্থ বলার পরও ওই শিক্ষার্থীকে কানে ধরে ওঠবস করার নির্দেশ দেওয়া আসিফুল ইসলামের ঠিক হয়নি। অভিযোগ পাওয়ার পরই আমি শাস্তি হিসেবে তাকে ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত রেখেছি। বলেছি ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে আসতে। যতদূর জানি, তিনি গতকাল সন্ধ্যার দিকে দুঃখ প্রকাশ করেও এসেছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন বলেন, অসুস্থ ছাত্রীকে ২০০বার কানে ধরে ওঠবস করানোর একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেবি