সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগ ও জাসদ নেতাদের বিরুদ্ধে গড়াই নদীর চর বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে ভূমিহীনদের কাছে টাকার বিনিময়ে নদীর চর বিক্রি করে বসিয়েছেন বসতি। ঘরপ্রতি নিয়েছেন ৩০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা।
সম্প্রতি প্রশাসন নদী চর অবৈধ দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান চালালে বেরিয়ে আসতে থাকে চর বিক্রির সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ ও জাসদ নেতাদের নাম। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জাসদ নেতারা মিলেমিশে অবৈধভাবে চর বিক্রি করে লুটে নিয়েছে প্রায় কোটি টাকা।
প্রশাসনের অভিযানের ফলে নেতাদের কাছ থেকে টাকা দিয়ে নদীর চর কিনে বিপাকে পড়েছেন হতদরিদ্ররা। উচ্ছেদকৃত পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জাসদ নেতা এবং জনপ্রতিনিধি ও তার স্বজনেরা মিলে একটি চক্র মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাদের এখানে বসবাস করতে দিয়েছে।
উচ্ছেদ হওয়া মানিকের স্ত্রী মেঘলা খাতুনের অভিযোগ, ‘হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের এক স্বজন তার কাছ থেকে ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে আড়াই কাঠা জমি দিয়েছে। তারপর তিনি এনজিও থেকে লোন নিয়ে ঘর করে বসবাস করছিলেন।
তিনি বলেন, প্রশাসন তাদের উচ্ছেদ করেছে। তাদের এখন আর মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। তাই টাকা ফেরত ও ক্ষতিপূরণ চান তিনি।
উচ্ছেদ হওয়া জেসমিন বলেন, ‘আমি বাঁধের চরে ভাড়ায় ছিলাম। দেখি এই চরে টাকার বিনিময়ে জমি দেওয়া হচ্ছে ঘরবাড়ি করার জন্য। আমিও স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য নেদাই মেম্বারকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে তিন কাঠা জমি নিয়ে কিস্তির লোন তুলে এই ঘরটা তুলেছিলাম। এখন আমার সব গেল। আমি এর বিচার চাই, আমার টাকা ফেরত চাই।
এ রকম রহিমা, সাজ্জাদ, জল্পনাসহ অন্যদের কাছ থেকেও অবৈধভাবে চর বিক্রি করে আওয়ামী লীগ ও জাসদ নেতারা লুটে নিয়েছেন টাকা। সবারই এখন একই অবস্থা।
তবে অভিযুক্ত হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস বলছেন, এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। নদীর চর বিক্রির সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নয় বলেও দাবি তার।
আর জেলা জাসদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জিল্লুরও একই দাবি। অন্যদিকে জনপ্রতিনিধি নেদাই মেম্বার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেই নাই, টাকা নিয়েছে ছেলেপেলে।’
এ বিষয়ে সদর উপজেলা (ভূমি) কমিশনার দবির উদ্দিন বলেন, গৃহহীন বা আশ্রয়হীন মানুষের জন্য ঘর করে দিচ্ছে সরকার। তারা চাইলে সরকারের কাছে ঘরের জন্য আবেদন করতে পারেন। এছাড়া কেউ যদি টাকার বিনিময়ে এসব সরকারি জমিতে কাউকে বসিয়ে থাকে সে বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আর কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) পার্থ প্রতীম শীল বলেন, ‘এটা চলমান প্রক্রিয়া। সরকারি সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলে রাখার কোনো সুযোগ নেই। যারাই এই দখলের সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন, তাদের আর যে পরিচয়ই থাকুক তা দেখা হবে না। আইন সবার জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য।’
জেবি