সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
নড়াইলের স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার বাঁশ যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। জেলার সবচেয়ে বড় বাঁশের হাট বসে চিত্রা নদীর পাড়ের পলইডাঙ্গায়। এ হাটে খুলনা ও বরিশার বিভাগের অন্তত ১৫টি জেলা থেকে ব্যাপারীরা বাঁশ কিনতে নড়াইলে আসেন। প্রতি রোববারে বসে এ হাট।
প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৩০ লাখ টাকার বেশি বাঁশ কেনাবেচা হয়। জেলার প্রায় ৫ হাজারের বেশি লোকের কর্মসংস্থান ঘটে এ বাঁশের হাটে। মাসে এক কোটি ২০ লাখ টাকার বাঁশ কেনাবেচা হয় এ হাটে।
নড়াইলের মাটি বাঁশ চাষের জন্য বেশ উপযুক্ত। এজন্য এখানে দীর্ঘদিন ধরে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশের চাষ হয়ে আসছে। জেলায় প্রায় ১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে অন্তত ৬৫ হাজার বাঁশের ঝাড় রয়েছে। প্রতিটি ঝাড় থেকে বছরে ৪০ থেকে ৫০টি বাঁশ পাওয়া যায়।
জেলায় তুলারামপুর, চালিতাতলা হাট, ভুমুরদিয়া, এ্যাড়েন্দা, চাচুড়ীসহ অন্তত ২০টি বাঁশের হাট রয়েছে। তবে নড়াইল সদরের ভদ্রবিলা ইউনিয়নের পলইডাঙ্গা গ্রামে বসে সবচেয়ে বড় বাঁশের হাট। চিত্রা নদীর পাড়ে প্রায় ১২ একর জায়গায় বসে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় এই হাট।
এখানে হাটবারে চলে বাঁশ কেনাবেচার ধুম। কেউ বাঁশ কিনতে ব্যস্ত, কেউ বাঁশ ট্রলারে সাজাতে ব্যস্ত, কেউবা বাঁশের ভুর (স্তুপ) বেঁধে নদীতে ভাসাতে। সপ্তাহের রোববার বসে পলইডাঙ্গা বাঁশের হাট। আগের দিন ভোর থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই হাটে তল্লা বাঁশ, ভাল্য বাঁশ বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে এসে জমা হয়।
মোংলা, খুলনা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাগুরা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলার ক্রেতারা এখানে বাঁশ কিনতে আসেন। রোববার হাটের দিন বাঁশ বেচাকেনা হয় সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে চলে দুপুর পর্যন্ত। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা বাঁশ কিনে নদীপথে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায়। তবে কিছু কিছু ব্যাপারী সড়কপথেও বাঁশ আনা নেওয়া করে। এছাড়া বাঁশ পরিবহনের সবচেয়ে জনপ্রিয় বাহন হলো নদীতে ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া।
ঘর তৈরি, পানের বরজ, সবজি চাষের মাচা, মাছ ধরার সরঞ্জাম, বাঁশের তৈরি নানা ধরনের আসবাব থেকে শুরু করে আধুনিক ডেকরেটরদের বিভিন্ন কাজে বাঁশের ব্যবহার এসব অঞ্চলে খুবই জনপ্রিয়। তাই ব্যাপারীরা এখান থেকে বাঁশ কিনে নিজেদের হাটে বিক্রি করে আবার ফিরে আসেন। নড়াইলে বাঁশের দাম নাগালের মধ্যে থাকায় ক্রেতারা খুশি। হাটে ১২৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২২৫ টাকা পর্যন্ত দামে বাঁশ পাইকারি বেচাকেনা হয়।
নড়াইলের পলইডাঙ্গা গ্রামের এই বাঁশের হাটটি এলাকার বেকারদের জন্য করে দিয়েছে কর্মসংস্থানের সুযোগ। প্রতি হাটের দিন স্থানীয় অন্তত শতাধিক দিনমজুর কাজ করে। এখানে কেউ করে বাঁশ ট্রলারে ওঠানোর কাজ, কেউবা করে বাঁশের ভুর (স্তুপ) সাজানোর কাজ, আবার কেউবা করে দূর-দূরান্ত থেকে আসা বাঁশ পরিবহন থেকে নামানোর কাজ, কেউ করে বাঁশ বাধার কাজ।
এইউ