সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
কুমিল্লার মুরাদনগরে শিশু আব্দুর রহমানকে (৫) অপহরণ করে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একজনকে চৌদ্দ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন কুমিল্লার আদালত।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে কুমিল্লার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. মোয়াজ্জেম হোসেন এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বোড়ারচর গ্রামের বাতেন বেপারীর ছেলে মো. ময়নাল হোসেন (৩৩), আবু মুসার ছেলে নাজমুল হাছান (৩০), মো. রবিউল হাসান (৩৪) ও মো. ছালামত খানের ছেলে মো. শাহীন খান ও শাহীন মিয়া (২০)। রায় ঘোষণাকালে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে পরদিন রাত অনুমান তিনটা ১৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় মুরাদনগর থানার গাংগাটিয়া গ্রের বাদীর বসত বাড়ির উত্তর পাশে চৌচালা টিনের ঘরের পূর্ব পাশের রুমের ভেতরে ভিকটিম মো. আব্দুর রহমানকে (৫) অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে আটক রাখে।
অনেক খোঁজাখুজি করে না পেয়ে ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ভিকটিমের বাবা কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার গাংগাটিয়া গ্রামের মৃত আবু তাহেরের ছেলে ওমান প্রবাসী মো. ফারুক মিয়া (৩৬) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মুরাদনগর থানায় অভিযোগ করেন। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. হামিদুল ইসলাম তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামি মো. ময়নালকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, আব্দুর রহমানকে (৫) অপহরণ করে বাদীর কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় অপহরণের ১০দিন পর ভিকটিম আব্দুর রহমানকে ময়নাল হোসেনসহ অপর আসামিরা পরষ্পর যোগসাজশে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
পরে আসামি ময়নালের আবাদি জমিতে পুঁতে রাখে। পরে তার দেখানো মতে পুলিশ আব্দুর রহমানে লাশ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপক্ষে আনিত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. হামিদুল ইসলাম ২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি আসামি মো. ময়নাল হোসেন, নাজমুল হাসান, মো. রবিউল হাসান ও মো. শাহিন খানের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আসামি মো. আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনা করে ।
পরে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামি ময়নাল হোসেন, নাজমুল হাছান ও মো. শাহীন খান, শাহীন মিয়াকে যাবজ্জীবন ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, আনাদয়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অপর আসামি মো. রবিউল হাসানকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড; অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পি পি) অ্যাডভোকেট মো. আমজাদ হোসেন বলেন, আশা করছি উচ্চাদালত এ রায় বহাল রাখবে। এর ফলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মো. এইচ এম আবাদ।
জেবি