দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুস সাত্তারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (২১ আগস্ট) যশোরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এই মামলা দায়ের করেছেন দুদক যশোর সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আল আমিন। দণ্ডবিধি ৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার নম্বর তদন্ত/মামলা নং- ০৬। আসামির হলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ত দপ্তরের উপপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. আব্দুর রউফ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আব্দুস সাত্তার, কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন। মামলার বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন দুদক যশোর সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আল আমিন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে ২০০৮ সালের ২২ অক্টোবর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রাথমিকভাবে ১০৮ জন জনবলের মঞ্জুরিসহ বেতন বরাদ্দ প্রদান করা হয়। মঞ্জুরিকৃত পদসমূহের মধ্যে সেকশন অফিসার ( গ্রেড-১) পদের মঞ্জুরি ছিল না। তৎকালীন ভিসি প্রফেসর ড. আর আই সরকারের স্বাক্ষরে ২০০৮ সালের ১৬ নভেম্বর নিয়োগ নীতিমালার শর্ত অনুযায়ী সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে একজন’সহ বিভিন্ন পদের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
তবে তৎকালীন ভিসির বদলির কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ভিসি প্রফেসর ড. মো. আব্দুস সাত্তার যোগদানের পর প্রথম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৫ মাস পর পুনরায় তার স্বাক্ষরে ২০০৯ সালের ২৩ এপ্রিল সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে একজনসহ বিভিন্ন পদের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি দুইটির প্রেক্ষিতে মো. আব্দুর রউফসহ ২০ জন প্রার্থী সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে আবেদন করেন। আবেদন যাচাই বাছাই করে চারজন প্রার্থীর অনুকূলে মৌখিক পরীক্ষার কার্ড ইস্যু করা হয়।
নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সংবিধি অনুযায়ী গঠিত ৩ সদস্যবিশিষ্ট বাছাই বোর্ডে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ভিসি প্রফেসর ড. মো. আব্দুস সাত্তার। এছাড়া বাছাই বোর্ডে সদস্য উপস্থিত ছিলেন যশোর-৩ (সদর) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য খালেদুর রহমান টিটো (বর্তমানে মৃত), বিশেষজ্ঞ সদস্য ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন। বাছাই বোর্ড ২০০৯ সালের ২২ আগস্ট উপস্থিত ৩ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করেন। বিজ্ঞপ্তির শর্তানুযায়ী পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও বাছাই বোর্ড অবৈধভাবে আবদুর রউফকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেন।
সেকশন অফিসার গ্রেড-১ (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদটি বিজ্ঞাপিত না হওয়া সত্ত্বেও অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকায় আব্দুর রউফকে বিজ্ঞাপিত সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) এর বিপরীতে সেকশন অফিসার গ্রেড-১ (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে নিয়োগের জন্য রিজেন্ট বোর্ড সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। প্রফেসর ড. মো. আব্দুস সাত্তার নিজে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর তথা প্রধান নির্বাহীর দায়িত্বে থেকে এবং রিজেন্ট বোর্ডের সভাপতি হয়ে যবিপ্রবির অনুমোদিত নিয়োগ নীতিমালা সুষ্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০০৯ সালের ১৪ অক্টোবর অফিস আদেশের মাধ্যমে তার যোগদানপত্র গ্রহণ করেন।
আব্দুর রউফ অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কর্মরত থাকা অবস্থায় সিলেকশন গ্রেডসহ বিভিন্ন সুবিধাদি প্রাপ্ত হয়ে বিভাগীয় প্রার্থীর সুবিধা নিয়ে ২০১৪ সালে সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে এবং ২০২১ সালে উপপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। ২০০৯ সালের অক্টোবর হতে ২০২২ সালের পর্যন্ত বেতন-ভাতা বাবদ সর্বমোট ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৭৩২ টাকা ৫২ পয়সা সরকারি কোষাগার হতে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন।
এইউ