সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
চীনের বিভিন্ন হাসপাতালে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে প্রসূতি ইউনিট। দেশটিতে জন্মহার আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, জিয়াংসু এবং গুয়াংডং এর পাশাপাশি ঝেজিয়াং প্রদেশের বেশ কয়েকটি হাসপাতাল প্রসূতি ইউনিট বন্ধ করে দিয়েছে কিংবা সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে।
২০২২ সালে চীনের জন্মহার রেকর্ড সর্বনিম্নে নেমে এসেছে। ওই বছর ৯৫ লাখ ৬০ হাজার শিশুর জন্ম হয়েছিল। ২০২১ সালের তুলনায় এই সংখ্যা প্রায় ১০ শতাংশ কম। এর মানে হলো ১৯৬১ সালের পর প্রথমবারের মতো জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। অর্থনৈতিক মন্দা চীনে জনসংখ্যাগত সংকটকে বাড়িয়ে তুলছে। এর ফলে বার্ধক্য ও সঙ্কুচিত জনসংখ্যা দেশের জিডিপি বৃদ্ধিকে লাইনচ্যুত করার হুমকি দিচ্ছে। চলতি বছর ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে চীনকে টপকে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশে পরিণত হয়েছে।
চীনা কর্মকর্তারা জন্মহার বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নিচ্ছেন। দেশটিতে ২০১৬ সালে এক সন্তান নীতি বাতিল করা হয়। পরিবারগুলোকে এখন তিনটি পর্যন্ত সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দেশটির সিচুয়ান প্রদেশ জন্মনিবন্ধনের সীমা সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ করেছে। কিছু স্থানীয় কর্তৃপক্ষ দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শিশুদের জন্য নগদ ভর্তুকিও প্রদান করছে। কিন্তু তারপরও তরুণরা ক্রমবর্ধমানভাবে সন্তান লালন-পালনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
এদিকে, এপ্রিল মাসে গুয়াংসি প্রদেশের একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র জানিয়েছে, জেলায় উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে তারা প্রসূতি ও গাইনোকোলজি ইউনিটে প্রসব করানো বন্ধ করবে। গত মাসে পূর্বাঞ্চলীয় শহর নিংবোর ইনঝু জেলার দ্বিতীয় হাসপাতাল জানিয়েছে, তারা আর মাতৃত্ব রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করবে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতালগুলো গর্ভাবস্থা, প্রসবকালীন এবং প্রসবোত্তর সময়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মতো প্রসূতি পরিষেবাগুলো বন্ধ করার জন্য কর্মী সংকটকে দায়ী করেছে।
তথ্যানুসারে, হুইঝোতে দুটি ক্লিনিক এবং গুয়াংজুতে একটি ক্লিনিক প্রসূতি বিশেষজ্ঞ এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সংকটের কারণে মাতৃস্বাস্থ্য ওয়ার্ড বন্ধ করে দিয়েছে।
তবে বেশ কয়েকটি অনলাইন মন্তব্য চীনের জনসংখ্যা হ্রাসের সঙ্গে বিষয়টিকে যুক্ত করেছে। একটি চীনা বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনাকারী সাইট নেটইজিতে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে, “মরু প্রসূতি বিভাগ মানে হল কম সংখ্যক নারী গর্ভবতী হচ্ছে... (চীনের) নবজাতক জনসংখ্যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হ্রাস পাচ্ছে এবং পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক নয়।”
হারবিন মাতৃ ও শিশু যত্ন হাসপাতালের একজন প্রসূতি বিশেষজ্ঞ চীনা সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “আগে জন্মের সংখ্যা একদিনে সাত বা আট বা ১০ হতো, এখন তা কয়েক দিনে একটি হচ্ছে। যদি দিনে একটি হয়, তবে এটি দুর্দান্ত।”
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, ব্লুমবার্গ।
জেডএ