দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
সারাদেশেই প্রতিনিয়ত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। জীবন ধারণের জন্য দৈনন্দিন চাহিদার পণ্য কিনতে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। যখন কোনোভাবেই দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানতে পারছে না সরকার। তখনই দেশব্যাপী দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মডেল উপস্থাপন করেছেন যুগ্ম সচিব কাজী আবেদ হোসেন।
যুগ্ম সচিব কাজী আবেদ হোসেন বর্তমানে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (অর্থ) হিসেবে কর্মরত আছেন। তার উদ্ভাবন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর তা বিশ্লেষণের মধ্যদিয়ে পাঠানো হয় মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে। সেখান থেকে গত ১৫ অক্টোবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। উক্ত পত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। এটি দেশব্যাপী বাস্তবায়ন করা গেলে সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সফল হবেন।
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব তথ্য জানান যুগ্ম সচিব কাজী আবেদ হোসেন।
তিনি বলেন, গ্রাম থেকে শহর, উপজেলা থেকে জেলা-বিভাগ, রাজধানী পর্যন্ত মূল্য নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ কৌশল তুলে ধরা হয়। সেখানে প্রতিটি পর্যায়ে নিত্যপণ্যের দাম হবে যৌক্তিক, আবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে না প্রান্তিক কৃষকও। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ হলে আমাদের দেশ খুব অল্প সময়ে অনেক বেশি মাত্রায় এগিয়ে যাবে। কারণ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মডেলটিতে সরকারের অর্থ ব্যয় হবে না, অতিরিক্ত জনবলের প্রয়োজন নেই, নতুন আইন তৈরির দরকার নেই। এটি সাধারণ মানুষের সহজ বোধগম্য ও তাৎক্ষণিক বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
তার এই মডেলে সাধারণ মানুষের হাতে কিভাবে কমমূল্যে সহজভাবে পণ্য পৌঁছাতে পারে সেজন্য অন্তত ৫০টি রূপরেখা তুলে ধরেন তিনি। সরকার যদি বাস্তবায়ন করেন তাহলে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা তার।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ মডেলের রূপরেখার ব্যাখ্যায় বলা হয়, এ ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত জনবল ও খরচ ছাড়াই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। প্রয়োজন হবে না নতুন আইন তৈরিও। যেখানে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ৩টি কমিটি গঠন করতে হবে এবং বাজার আলু, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে যেকোনো নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারণ হবে কৃষক, উৎপাদক বা আমদানি মূল্যের ওপর। এর বেশকিছু রুপরেখাও তুলে ধরেন তিনি। সাধারণ সময়ের পাশাপাশি অতি বৃষ্টি, বন্যাসহ দুর্যোগকালীন সময়ের জন্যও আকষ্মিক মূল্যবৃদ্ধি রোধে করণীয় তুলে ধরা হয়।
তার প্রস্তাবণা অনুযায়ী গ্রামীণ হাট থেকে জেলা বা বিভাগীয় শহরের প্রতিটি বাজারে বোর্ডের বাজারদর তুলে ধরতে হবে। যা নির্ধাণ করা হবে উৎপাদক বা কৃষক পর্যায়ের দামের ওপর। কোনো বিক্রিতা ওই দামের অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করতে পারবে না। বাস্তবায়ন করা গেলে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবেও বলে আশা তার।
তিনি বলেন, এই রূপরেখা বাস্তবায়ন হলে ৬৪ জেলা, বিভাগীয় শহর, উপজেলা ও গ্রামীণ হাট পর্যায়ে দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত হবে। নিত্যপণ্যের মূল্য কমাতে কৃষকের উৎপাদক খচর কমানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে তার মডেলে। যেখানে কৃষকের জন্য ডিজেলসহ প্রয়োজনীয় উপকরণের মূল্য হ্রাস এবং হিমাগার, নিত্যপণ্য পরিবহন ও অন্যান্য বিষয়ে নজরদারির বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি মডেলটি আরও গ্রহণযোগ্য বা তথ্যভিত্তিক ও বহুমাত্রিক করতে দেশের সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ এবং প্রাজ্ঞজনের সমন্বয়ে একটি গবেষণা কমিটি করার প্রস্তাব রাখা হয়।
কাজী আবেদ আলী এরআগে প্রজনন মৌসুমে ইলিশ মাছ না ধরার মডেল প্রস্তুত করেছিলেন। যা ২০১১ সাল থেকে দেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
আরএ