সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
কোচিং বাণিজ্য নিয়ে শিক্ষকদের বিরোধে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে মুন্সীগঞ্জের একটি বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহতের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কোচিং বাণিজ্য নিয়ে কয়েকজন শিক্ষকের বিরোধের কারণে মুন্সীগঞ্জ শহরের আলবার্ট ভিক্টোরিয়া যতীন্দ্র মোহন গভর্নমেন্ট গার্লস হাই স্কুলে ঘটছে বিশৃঙ্খলা। শিক্ষকের পক্ষ-বিপক্ষে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, শিক্ষককে হেনস্তা, চাপের মুখে শিক্ষকের বদলির আবেদন আদায় করার ঘটনা নিয়ে বিরাজ করছে বিশৃঙ্খলা। বিঘ্ন ঘটছে পাঠদানে।
জানা যায়, বিদ্যালয়টিতে কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন কিছু শিক্ষক। তাই এ বাণিজ্যের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে এ বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মধ্যে চলছে গ্রুপিং। এরই জেরে ২৯ জন শিক্ষক ১ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে শিক্ষক মনোরঞ্জন ধরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেন। এ ছাড়া একই দিন মনোরঞ্জনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভসহ জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দাখিল করে কিছু শিক্ষার্থী। এর প্রতিবাদে পরদিন ২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের অপর শিক্ষার্থীরা মনোরঞ্জনের পক্ষে জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার ও সেনাক্যাম্পে পাল্টা স্মারকলিপি দেওয়াসহ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে।
এতে জেলা প্রশাসক ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত চলাকালেই গত ৫ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেটের শিক্ষককরা শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে চাপে ফেলে বদলির আবেদন আদায় করে নেয় বলে অভিযোগ করেন মনোরঞ্জন ধর। তিনি বলেন, কিছু শিক্ষক ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামিয়েছেন। এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড শিক্ষক আরিফ হোসেন ও আবদুল গফুর সরকার।
তবে, এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আব্দুল গফুর সরকার জানান, বিদ্যালয়ে ২ শিফটে ক্লাস হয় আমি প্রভাতি শাখায় ও মনোরঞ্জন স্যার দিবা শাখায়। ভিন্ন বিষয়ের হওয়ায় জাতীয় দিবস পালন ও বিদ্যালয়ের মিটিং ছাড়া আমাদের দেখা হওয়ার কোন সুযোগ নেই। উনার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত বা পেশাগত কোনো বিরোধও নেই। বিদ্যালয়ের ৩০ জন শিক্ষক উনার বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে অভিযোগ করায় তিনি অনুমান করে আমার নামে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তবে আমার ব্যাপারে ওনার সকল বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
মনোরঞ্জন ধরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক নূরে আলম জানান, আমি পাঁচ মাস এই বিদ্যালয়ে যোগদান করার পর এখনও পর্যন্ত কোন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পাইনি। শিক্ষার্থীরা সেপ্টেম্বরে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ পত্র দাখিল করে। তার একটি অনুলিপি আমাকে দেওয়া হয়েছে। তার স্বাক্ষরিত বদলির আবেদন জেলা প্রশাসন হয়ে এখন বোর্ডে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। স্কুলের বিশৃঙ্খলা এড়াতে পরবর্তী আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত তিনি ছুটিতে আছেন।
বিদ্যালয়ের কোচিং সিন্ডিকেট ভেঙে ও বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী উভয় পক্ষকেই বিদ্যালয় থেকে অপসারণ করে প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপীঠের ঐতিহ্য রক্ষা ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবি অভিভাবকদের।
এফএইচ