সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
বাগেরহাটে ঘরে ঢুকে মিনাল কান্তি চ্যাটার্জি (৬৫) নামের এক সাবেক স্কুলশিক্ষককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। মারপিটে গুরুত্বর আহত হয়েছেন ওই শিক্ষকের স্ত্রী ও মেয়ে। সোমবার (০৬ আগস্ট) দিবাগত রাতে বাগেরহাট সদর উপজেলার রাখালগাছি ইউনিয়নের ছোট পাইকপাড়া গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে।
নিহত মিনাল কান্তি চ্যাটার্জি (৬৫) ছোট পাইকপাড়া গ্রামের প্রয়াত কেশব লাল চ্যাটার্জির ছেলে। তিনি পার্শবর্তী মধুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। আহত তার স্ত্রী শেফালি চ্যাটার্জি (৬০) ও মেয়ে ঝুমা রানী চ্যাটার্জিকে (৩৫) বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শেফালি চ্যাটার্জি বলেন, ঘর দরজা সব ভাঙছে তারা, সব কিছু নিয়ে গেছে। ঘরে কিছু নেই। সন্ধ্যার দিকে একদল এসে বাড়ি ঢিলা মারছে। রাতে এসে এভাবে মেরে ফেলবে এটা বুঝিনি।’
আর্তনাদ করতে করতে তিনি বলেন, ‘একটু জায়গা আছে, ওই জায়গা আমার কাল হইছে। সব নিয়ে যেতো তারা, মেরে ফেললি কেন।’
মাথাসহ তার শরীরের বিভিন্ন ক্ষত স্থাতে ৩০ এর অধিক শেলাই দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে পাশের সিটে থাকা আহত মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ঘরে আমার ছোট ছেলে ও বোন ছিল। তাদের ঘরের পাটাতনের ওপর ও খাটের নিচে লুকিয়ে রেখেছি। আমাদের কি দোষ। আমরা তো কোনো দল করি না। শুধু শুধু আমাদের ওপর কেন হামলা করল। আমার বৃদ্ধ বাবাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটায় মেরে ফেলল।
ঝুমা রানী চ্যাটার্জি আরও বলেন, প্রতিবেশী হুমায়ুন শেখ ও নুরুল ইসলামের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিবাদ ছিল। সোমবার সন্ধ্যায় নুরুল ইসলাম বাড়িতে লোকজন নিয়ে এসে হুমকি দিয়ে যায়। রাতে মুখোশ পড়ে এসে আমাদের ওপর হামলা ও ভাঙচুর লুটপাট করে। ঘরের সবকিছু নিয়ে যায় হামলাকারীরা। আমরা এই হত্যা ও লুটপাটের বিচার চাই।
এদিকে এলাকাবাসী জানায়, ঘটনার পর থেকে হুমায়ুন শেখ ও নুরুল ইসলাম শেখ পলাতক রয়েছেন। তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
অন্যদিকে কচুয়া উপজেলার বাধাল এলাকায় নাজমা সিকদার সেতারা (৫৩) নামের এক নারীকে পিটিয়ে ও কুপিয়েছে প্রতিপক্ষরা। তার বাড়ি থেকে হাস-মুরগি গবাদিপশুসহ সবকিছু নিয়ে গেছে। গোপালপুর ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন।
বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাজমা সিকদার সেতারা (৫৩) বলেন, স্থানীয় নিলু, শহীদ, আছাদ ও মাহফুজদের সাথে আমার মামলা ছিল। তারাই আমার ওপর হামলা করেছে। তাদের মারধরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের রক্ত জমাট বেঁধে গেছে। পায়েসহ বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত ক্ষত যখম হয়েছে। সব কিছু লুট হয়ে গেছে। বাড়িতে কিছু নেই।
এদিকে জেলার বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়সহ নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কিছু নেতাকর্মীর আহত হবার খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে আহতদের সংখ্যা এবং পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সোমবার দুপুর থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মারধরে আহত জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আহত ৫০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। বিভিন্ন উপজেলায়ও আহতরা চিকিৎসা নিয়েছেন বলে খবর রয়েছে।
তবে এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালের চিকিৎসক, জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের পক্ষ থেকে কেউ কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্ত অনেকের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
আরএ