সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
রাঙামাটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে। ২০১২ সালে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানটিতে ছাত্রলীগের প্রথম কমিটিই অনুমোদন হয় ৩০ জুন, ২০২৪। ২৭ সদস্যের কমিটি ঘোষণার কদিন পরেই কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে তাতে সম্পৃক্ত হয়ে কর্মসূচী পালন করে কলেজটির শিক্ষার্থীরা।
তাদের একটি কর্মসূচীতে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী নয়, এমন বাহিরে থেকে যাওয়া ছাত্রলীগ কর্মীরা বাধা প্রদান ও দুর্ব্যবহার করার অভিযোগও উঠে। এরই মধ্যে গত তিন দিন সারাদেশে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, মারধর ও সহিংসতার প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘোষনা দিয়ে একের পর এক ছাত্রলীগ নেতা সংগঠন ছাড়ার ঘোষণা দিতে থাকেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৫ ছাত্রলীগ নেতা কোটা সংস্কার ইস্যুতে ছাত্রলীগের ভূমিকায় ব্যথিত হয়ে এবং ১ জন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেছেন। এরা সবাই দায়িত্বশীল পদেই ছিলেন।
ঘোষিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৃজন দে ফেসবুক লিখেছেন, ‘বর্তমানে দেশের ন্যাক্কারজনক অবস্থাতে আমি নিজেকে খুবই ক্ষুদ্র মনে করছি। আমি লজ্জিত, আমি দুঃখিত। ......সজ্ঞানে, অনুশোচনা ও বিবেকের তাড়নায় এবং নিজের ব্যক্তিগত ব্যর্থতা মাথায় নিয়ে ছাত্রলীগের পদ থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি এবং সকল ধরণের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। বিবেকের চেয়ে বড় কিছু এই দুনিয়াতে নাই।’
যুগ্ম সাধারন সম্পাদক প্রাঙ্গণ মল্লিক লিখেছেন,
‘আমি প্রাঙ্গণ মল্লিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ হতে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলাম।’
আরেক সাংগঠিক সম্পাদক কমল ত্রিপুরা লিখেছেন,
‘...ভাবছিলাম ছাত্রলীগ হয়ে ছাত্রদের আর ক্যাম্পাসের জন্য কাজ করব। কিন্তু গতকালকে নিজের প্রিয় ক্যাম্পাসের সাথে যা হলো তা খুবই অপ্রত্যাশিত। ...তাই এই মুহুর্তে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ (সাংগঠনিক সম্পাদক) থেকে পদত্যাগ করলাম।
যুগ্ম সাধারন সম্পাদক দীপ্ত দে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে লিখেছেন,
‘...কিন্তু দিন শেষে যখন নিজের জুনিয়র, ব্যাচমেইট, সিনিয়রদের সেভ করতে গিয়ে সেই সংগঠনই বাঁশ দিয়ে মেরে মাথা ফাটায় দেয়, তখন আর কি বলার থাকে?
পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে দীপ্ত আরো লিখেন,
‘বিষয়গুলো আমার বিবেককে আঘাত করছে, যা আমার পক্ষে নেয়া সম্ভব নয়।’
আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াদুল হক লিখেছেন,
‘চলমান সাধারন শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন এর যৌক্তিক একদফা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন রেখে, এই মুহুর্তে আমি স্বেচ্চায় ছাত্রলীগের কমিটির থেকে পদত্যাগ করলাম।’
সহ-সভাপতি ক্যাচিংনু মারমা ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন জানিয়ে লিখেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাথে তার পদত্যাগের কোন সম্পর্ক নেই।
এই বিষয়ে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তন্ময় চৌধুরী জানান, ‘শিক্ষার্থীরা মিছিল সমাবেশ করেছিলো। আমি সেদিন ক্যাম্পাসে ছিলাম না। কিন্তু জেলা ও ওয়ার্ডের নেতারা এসে প্রতিরোধের চেষ্টা করে এবং পুলিশও আসে। সেখানে পাল্টাপাল্টি শ্লোগান নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির শুরু হয়। মুখোমুখি হয় দুইপক্ষ। কিছু অনাকাংখিত ঘটনাও ঘটেছে।
পদত্যাগ করা দীপ্ত দে’র মাথা ফেটে যায় এইসময়, তার মাথায় সেলাই দিতে হয়েছে। ফলে তারা অভিমান করে পদত্যাগ করেছে। মোট ৬ জন পদত্যাগ করেছে। এদের ৫ জন কোটার ইস্যুতে এবং অন্যজন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েছে। আমরা তাদের সাথে কথা বলব, আলোচনা করে সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে।’
এমএ