দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
গাইবান্ধায় গত ৭২ ঘন্টায় সকল নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। গাইবান্ধা ঘাঘট, বক্ষ্মপুত্র ও যমুনা, করতোয়া ও তিস্তাসহ সকল নদীর পানি কমতে থাকায় তাদের নিজ ভিটেমাটিতে ফিরতে শুরু করেছে তাঁরা। এদিকে অনেকের বাড়ি ঘর চলাচলে রাস্তা থেকে পানি নামেনি। বিশুদ্ধ পানি ও গো খাদ্যের দুর্ভোগ বেড়েছে।
গাইবান্ধার চারটি উপজেলার চঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল এখনো পানির নিচে তলিয়ে আছে। এখনো মানুষের কষ্ট কমছে না। গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগজ্ঞ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ২০ টি ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার পরিবার এখনো পানিবন্দি হয়ে রয়েছে।
সদর উপজেলার মোল্লারচর, কামারজানী, ঘাঘোয়া, গিদারী,ফুলছড়ি উপজেলার এরান্ডাবাড়ি,ফজলুপুর,কঞ্চিপাড়া, উড়িয়া, ও সুন্দরগজ্ঞ উপজেলার কাপাসিয়া, তারাপুর, বেলকা, হরিপুর ইউনিয়সহ এসব এলাকায় রাস্তা - ঘাট, ঘরবাড়ি থেকে পানি কিছুটা কমলেও এসব এলাকার ফসিল জমি গুলো পানির নিচে তলিয়ে আছে।
খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকটে আছেন তারা। ফসল উৎপাদন নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। সরকারি-বেসরকারিভাবে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য সুদবিহীন লোনের ব্যবস্থা করলে দূর্যোগের ঘনঘটা কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
দীর্ঘদিন পানি মধ্যে থাকায় এসব এলাকার মানুষ নানান রকম রোগ-ব্যাধিতে ভুগছেন। জ্বর, সর্দি, কাশি,পেটের অসুখ ও হাত পায়ে পানিবাহিত রোগসহ ঘা দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর ১২ টায় গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি ৫ সেমি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘাঘট নদীর পানি ১১ সেমি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ৬৪ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। করতোয়া নদীর পানি ১ সেমি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ১০৩ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, তিস্তা নদীর পানি ২ সেমি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪১ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি কমলেও ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত সদরের কামারজানি, ঘাগোয়া, ফুলছড়ির ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ি প্লাবিত এলাকার পানি এখনো পুরোপুরি নামেনি। এতে হতাশ আর দু:চিন্তায় পড়েছে বন্যা কবলিতরা। পানিবন্দি এসব এলাকার মানুষজন শিশু-বৃদ্ধ ও গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। প্রকট আকার ধারণ করেছে গো-খাদ্যসহ বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা।
দ্বিতীয় দফায় বন্যায় জেলায় পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে আউশ ধান, পাট, ভূট্টা, বীজতলা ও শাকসবজিসহ ৬ হাজার ৪৩৬ হেক্টর কৃষি জমির ফসল। গত দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় বন্যায় নিমজ্জিত থাকায় ক্ষতি হয়েছে রোপা আমন, পাট, তিল, কালাই, বাদাম, ভূট্টাসহ অন্যান্য শাকসবজিরও। ক্ষতি হয়েছে মৎসখাতেও। সব মিলিয়ে জেলার অর্থনীতিতে ঘাটতি ১০০ কোটি টাকারও বেশি।
পানি ওঠায় ১৪৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩টি দাখিল মাদ্রাসাসহ মোট ১৫৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রাথমিক ও জেলা শিক্ষা বিভাগ।
এ ব্যপারে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক মুঠোফোনে দেশ টিভিকে জানান, গাইবান্ধার সব কয়টি নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে আশা করা যায় দুই-তিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
এমএ