সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
ফরিদপুরে বেশ কয়েকটি উপজেলা সড়কের প্রায় জায়গা বেহাল। কোথাও কোথাও রাস্তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পিচ-খোয়া উঠে গর্তের রূপ নিয়েছে। কোথাও সড়ক ধসে পড়েছে। এসব সড়ক অনেক আগে থেকেই সংস্কার করা দরকার হয়ে থাকলেও সংস্কার করা হয়নি।
সংস্কার না হওয়ায় ফরিদপুরের বোয়ালমারী-বেড়ীরহাট-শিরগ্রাম সড়কটি ভ্যান, মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকসহ ছোট বড় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। দুটি রাস্তার ৮ কিলোমিটারের দীর্ঘ এই সড়কের অনেক স্থানে পিচ খোয়া নেই বললেই চলে।
সড়কে প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ বড় বড় খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় হেলেদুলে ও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ছোট-বড় যানবাহন। ফলে এই পথে যাত্রীদের দৈনন্দিন চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ভাঙ্গা সড়কসংলগ্ন বাড়ির লোকজনের পানির বালতি ও পাখা নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ফরিদপুরের বোয়ালমারী জিসি হতে আলফাডাঙ্গার বেড়ীরহাট বাজার সড়কের অন্তত তিনশরও বেশি স্থানে পিচ, খোয়া উঠে গেছে। কোথাও কোথাও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক জায়গায় সড়কের কিনারার অংশ ভেঙে পড়ে গেছে। ভ্যান, অটো রিকশা, মোটরযানে চড়ে যাত্রীরা জরুরি কোনো কাজে একটু গতিতে চলাচল কতে গেলেই ঝাঁকুনিতে হেলেদুলে পড়তে হয়।
এছাড়া বোয়ালমারী-শিরগ্রাম সড়কের কয়েকটি স্থানে রাস্তা ভেঙ্গে বারাশিয়া নদীতে পড়ে গেছে। ইট বালি দিয়ে কয়েকবার কিছুটা ঠিক করলেও ভাঙ্গাচোরা থাকায় বিভিন্ন সময় চলাচলকারীদের মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হয়। তবে বৃষ্টির দিন হলে দুর্ভোগের আর সীমা থাকে না।
বোয়ালমারী-বেড়ীরহাট সড়কে পৌর শহরের শেষ প্রান্ত সুইচগেট, বাগুয়ান ব্রিজ, ফুলতলা, ভূমি অফিসের সামনে, নদের চাঁদ হাইস্কুলের সামনে, নদেরচাঁদ বাজার, ভাটপাড়া সড়কের সামনে, ইটভাটার সামনে, হরিহরনগর কমিউনিটি ক্লিনিকের সামনে, সুইচগেটের সামনে, বাওড়ের সামনে, ভেন্নাতলা বাজার সামনে, কামার হেলা আমিনুর রহমানের বাড়ির সামনেসহ এলাকার অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে পড়ছে।
অপরদিকে বোয়ালমারী-শিরগ্রাম সড়কের জালিয়াডাঙ্গা গ্রামের রনি মাস্টারের বাড়ি সামনে, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুচ মোল্যার বাড়ির সামনে, রজব আলী দোকানের সামনে, আব্দুল আজিজ এতিমখানা-মাদরাসার সামনে, গুনবহা মকলেসের বাড়ির সামনেসহ রাস্তা ভেঙ্গে বারাশিয়া নদীতে পড়ে গেছে।
রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বোয়ালমারী-বেড়ীরহাট এবং বোয়ালমারী-শিরগ্রাম সড়কটি গুনবহা ইউনিয়নের গুনবহা, বাগুয়ান, চাপলডাঙ্গা, দরিহরিহরনগর, নদেরচাঁদ ঘাট, উমরনগর, আখালীপাড়া, মুরাইল, নয়ানীপাড়া, আলফাডাঙ্গার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের চাদড়া, ভেন্নাতলা, চরনারানদিয়া, বেড়ীরহাট এবং বানা ইউনিয়নের বেলবানা, রুদ্রবানা, শিরগ্রাম, শিয়ালদীসহ দুইটি সড়কে দুই উপজেলার ৪০থেকে ৫০হাজার মানুষ বোয়ালমারী শহর ও ফরিদপুর জেলা শহরে যাওয়া আসার একমাত্র রাস্তা। প্রায় ৮ বছর আগে সড়কটি সংস্কার করা হয়েছিল। এরপর আর সড়কটি সংস্কার হয়নি। দিন দিন সড়কটির অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সড়কের বেশির ভাগ অংশে পিচ ও খোয়া উঠে খানাখন্দে ভরে গেছে। এ রাস্তায় বৃষ্টির দিন এলে মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকে না।
গুনবহা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মঞ্জুর হোসেন জানান, দিন দিন সড়কটির অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সড়কটি সংস্কার না হলে পশ্চিম বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গার মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাবে। পুরো সড়কটি ভাঙাচোরা হওয়ায় যানবাহন যেতে চায় না। গেলেও ভাড়া দ্বিগুন গুনতে হয়।
হরিহরনগর এলাকার বাসিন্দা দলিল লেখক লিটন শেখ জানান, দিনের বেলায় ছাড়া রাত হলে আমি বাড়িতে যাই না। ভয় করে, কোন সময় কোন গর্তে পড়ে যাই। নতুন মোটরসাইকেল বা কেউ যদি ভ্যান এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে তাহলে এক সপ্তাহের মধ্যে ঝনঝনানি শুরু হয়ে যাবে।
শুধু বোয়ালমারী-বেড়িরহাট সড়কে ২৫০ থেকে ৩০০ খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। গত ৭ বছর হলো সংস্কার হয় না রাস্তাটি।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) পূর্ণেন্দু সাহা জানান, আমি এ উপজেলায় নতুন কয়েক মাস যোগদান করেছি মাত্র। বোয়ালমারী-বেড়িরহাট জিসি সড়ক ফরিদপুর-রাজবাড়ি উন্নয়ন প্রকল্পে প্রশস্তকরণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে প্লানিং কমিশনে সড়কটি পাশের অপেক্ষায় আছে। সড়কটি ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সর্বশেষ সংস্কার করা হয়েছিল বলে ধারণা করছি। আর বোয়ালমারী-শিরগ্রাম জিসি সড়ক আগামী অর্থবছরের সংস্কারের তালিকায় পাঠানো হবে।
জেবি