সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
ময়মনসিংহে সাবাস বাহিনীর ফের হামলায় দুইজন আহত হয়েছেন। আহতদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (২২ এপ্রিল) রাতে দিঘারকান্দা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পুলিশ।
বিগত কয়েক বছর ধরে নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দুলু এবং নবনিবার্চিত স্থানীয় কাউন্সিলর ওমর ফারুক সাবাসের বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকটি মামলাও চলমান রয়েছে।
রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সাবাস বাহিনীর হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে দায়ের করা দেলোয়ার হোসেন দুলুর মামলাটি।
এই মামলায় সাবাসসহ তার বাহিনীর বেশ কয়েকজন জেল খাটেন। অভিযোগ উঠেছে মামলা না তোলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় সাবাস বাহিনীর সন্ত্রাসীরা দুলু ও তার পরিবারের লোকজনের ওপর হামলা করে।
সোমবার রাত ১০টার দিকে সাবাসের বাসার সামনে দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সময় দেলোয়ার হোসেন দুলুর ভাগনে আকাশ এবং ভাতিজা তাওসিফ রহমান তৌফিককে গতিরোধ করে পিটিয়ে আহত করে সাবাসের লোকজন।
পরে আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তৌফিকের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ছুটি দেওয়া হলেও আশঙ্কাজনক আকাশ ভর্তি রয়েছেন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি মো.আকাশ বলেন, দেলোয়ার হোসেন দুলুর ভাগনে হওয়ার কারণে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। সাবাস আগে থেকেই সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপরোয়া হয়ে গেছে। মামাকে মারার উদ্দেশে তার দোকানে হামলা করায় মামলা হয়েছে। সে মামলায় সাজা হওয়ার আশঙ্কায় সাবাস এবং তার বাহিনীর লোকজন আমাদের ওপর অত্যাচার শুরু করছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, গতকাল সোমবার সাবাসের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তার ভাই সুভাসসহ ১৫ থেকে ২০ জন আমাকে আটকে মারধর করে। দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঠা দিয়ে পিঠ, ঘাড়, পায়ে প্রচণ্ড আঘাত করা হয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
আহত তাওসিফ রহমান তৌফিক বলেন, এলাকায় সন্ত্রাসী, ভূমি দখল করা সাবাস বাহিনীর প্রধান কাজ। তার হামলা হুমকি এবং মারধরের শিকার হয়নি এমন লোক এলাকায় খুব কমই পাওয়া যাবে।
সাবাসের নামে হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। আমার চাচা দুলু অন্য একজন প্রার্থীর পক্ষে নিবার্চন করায় আজকে আমাদের মাশুল গুনতে হচ্ছে। আমাদের পরিবার প্রাণনাশের হুমকিতে আছে। পুলিশও আমাদের খুব একটা সহযোগিতা করছে না।
২৫ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দুলু বলেন, নীতি আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করি; অন্যায়ভাবে কারো জমি দখল করা আমার কাজ নয়। ২০১৯ সালের নির্বাচনে সাবাসের পক্ষে কাজ না করায়; সাবাস আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আমাকে মারার জন্য তার সন্ত্রাসী বাহিনী পাঠায়। তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার ওপর হামলা করে; সাহস থাকার কারণে সেদিন বেঁচে যাই। যা সিসি ক্যামেরায় দৃশ্যমান। এরপর মামলা করলে সে মামলা প্রত্যাহার করতে নানা হুমকি। তা না করায় আমার পরিবারের ওপর দফায় দফায় হামলা করা হচ্ছে।
২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর ফারুক সাবাস বলেন, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় দুলুর লোক ভুট্ট আমাদের সজিবের ওপর মোটরসাইকেল তুলে দিলে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে তাদের দুইজন এবং আমাদের দুইজন আহত হয়। তবে আমরা তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাসায় নিয়ে এসেছি। কোনো ঘটনা ঘটলেই তারা পূর্বের বিষয় নিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়। আমরা মার খেলেও লজ্জায় কাউকে বলতে পারি না।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন বলেন, পূর্ব বিরোধে স্থানীয় কাউন্সিলর সাবাসের লোকজন দুলুর লোকজনকে মারধরের অভিযোগে ঘটনাস্থলে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুজন। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেবি