সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালে ব্যথার ইনজেকশন পুশ করার পর ছটফট করতে থাকে রোগী। স্বজনরা অক্সিজেনের জন্য বারবার বললেও দায়িত্বরত নার্স অক্সিজেন সরবরাহ না করায় অবশেষে মারা যান মেরুদন্ডে ব্যথা নিয়ে ভর্তি হওয়া ব্যবসায়ী শ্যামল দাস (৫৫)। হাসপাতালে এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ স্বজন ও স্থানীয়রা। অভিযুক্তের বিচার দাবি করেছেন তারা।
স্বজনদের অভিযোগ, মেরুদণ্ডের ব্যথা নিয়ে রোববার বিকেল ৫টার দিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শহরের পুরান বাজারের পান ব্যবসায়ী ও মাদারীপুর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের আমিরাবাদ এলাকার রামজীবন দাসের ছেলে শ্যামল দাসকে। হাসপাতালের নিচতলার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রিয়াদ মাহমুদ চিকিৎসাপত্র দিয়ে ভবনের ছয়তলায় ভর্তি দেন রোগীকে। ভর্তির পর চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র দেখে রোগীকে ব্যথার ইনজেনশন পুশ করেন কর্তব্যরত নার্স সুজাতা। পরে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট ও দাপাদাপি। অক্সিজেনের অভাবে সারা শরীরে ব্যথার যন্ত্রনায় ছটফট করতে থাকেন শ্যামল। এ সময় রোগীর স্বজনরা নার্সকে অক্সিজেনের কথা বললে, ব্যস্ততা দেখিয়ে অন্য কাজে মনোযোগ দেন তিনি। এরপর রাত ৮টার দিকে মারা যান ওই ব্যবসায়ী। নার্সদের দায়িত্ব অবহেলায় পান বিক্রেতার মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ করে এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন সিভিল সার্জন। এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
শ্যামল দাসের ফুফাতো ভাই গজেন দাস বলেন, আমার ভাইয়ের ১১ বছরের এক ছেলে ও ১৪ বছরের এক মেয়ে রয়েছে। এই সংসারটা এখন কিভাবে চলবে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নার্সের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
শ্যামল দাসের ছোট ভাই শংকর দাস অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হবার পর আমার ভাইকে ঠিকঠাক চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। তাই অল্পসময়ের মধ্যে আমার ভাই মারা গেছে। এই ঘটনার বিচার চাই।
মাদারীপুর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজিব মাহমুদ কাওসার বলেন, ‘শুধুমাত্র অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যু হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। সরকারি হাসপাতালে সবধরণের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। যে নার্স দায়িত্ব অবহেলা করেছে, তার বিচার ও হাসপাতাল থেকে অপসারণ চাচ্ছি।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঝামেলা হচ্ছে, এমন খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরবর্তীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এ ব্যাপারে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সিভিল সার্জন ও জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত¡বধায়ক ডা. মুনীর আহমেদ খান সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতাল থেকে মুঠোফোনে বিষয়টি কর্তব্যরত চিকিৎসক আমাকে অবগত করেছে। ঘটনা কি ঘটেছে, সবকিছুই পর্যলোচনা করে নার্সের দোষ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এফএইচ