সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার সময় নৌকাডুবিতে নিহত ৯ জনের মধ্যে ৫ জনই মাদারীপুরের রাজৈরের বাসিন্দা। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে লিবিয়ার দূতাবাসের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহতদের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন স্বজনরা।
স্বজনরা জানায়, গত ১৪ জানুয়ারি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বেশ কয়েকজন যুবক ইতালির উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে গত বুধবার লিবিয়া থেকে দালালদের মাধ্যমে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় রওনা দেয় তারা। তিউনিশিয়ার ভুমধ্যসাগরে নৌকার ইঞ্জিন ফেটে আগুন ধরে যায়। পরে ভুমধ্যসাগরেই ডুবে যায় নৌকাটি।
এতে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে মামুন শেখ (২০), সেনদিয়া গ্রামের সুনীল বৈরাগীর ছেলে সজল বৈরাগী (২৫), কবিরাজপুর ইউনিয়নের কিশোরদিয়া গ্রামের মৃত তোঁতা খলিফার ছেলে কায়সার খলিফা (৩৫), বাজিতপুর ইউনিয়নের কোদালিয়া গ্রামের মিজানুর রহমান কাজীর ছেলে সজীব কাজী (১৮) ও কদমবাড়ি ইউনিয়নের উত্তর কদমবাড়ি গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে নয়ন বিশ্বাসের (২০) মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় কোস্টগার্ড। নিহতদের খবর বাড়িতে আসলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন স্বজনরা।
স্বজনদের অভিযোগ, মানবপাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের গজারিয়া গ্রামে রহিম শেখ ও রাঘদি ইউনিয়নের সুন্দরদী গ্রামের বাদশা কাজীর ছেলে মোশারফ কাজী প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে নেয় ১০-১৫ লাখ টাকা। পরে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালি পাঠালে ঘটে এই দুর্ঘটনা।
নিহত সজীব কাজীর বাবা মিজানুর রহমান কাজী বলেন, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদী ইউনিয়নের গজনিয়া গ্রামের রহিম দালালের সাথে ১৪ লাখ টাকা চুক্তি হয়। রহিমের ভাই কামাল আমার কাছ থেকে নগদ ১২ লাখ নিয়ে আমার ছেলেকে লিবিয়া পাঠায়। পরে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালী পাঠানোর সময় ঘটে এই দুর্ঘটনা। শুনেছি আমার সজীব আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিল। দুইদিন পরে মৃত্যুর খবর পেয়েছি।
নিহত কায়সার খলিফার স্ত্রী নাজমা বেগম জানায়, রাজৈরের পাইকপাড়া ইউনিয়নের দামেড়চর গ্রামের অবুঝ মাতুব্বর প্রথমে সাড়ে ৮ লাখ টাকা চুক্তিতে লিবিয়া নেয়। পরে বড় ইঞ্জিন চালিত নৌকায় দেয়ার কথা বলে আরো সাড়ে ৪ লাখ টাকা নিয়ে ছোট একাটি নৌকায় পাঠালে দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে আমার স্বামী মারা যায়। সব কিছু বিক্রি করে এবং সুদে টাকা এনে স্বামীকে বিদেশে পাঠানোর স্বপ্ন দেখেছিলাম, এখন আমার সবই শেষ হয়ে গেল। আমার দু’টি মেয়ে নিয়ে কিভাবে বাঁচবো।
মাদারীপুর পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, তিউনিসিয়ার ভুমধ্যসাগরে মাদারীপুরের ৫ জনসহ বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি মারা গেছে। এই ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এও