সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলায় বাজারফান্ডের জায়গায় ব্যাংক ঋণ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মুখ থুবড়ে পড়ছে অর্থনীতির চাকা। গত চার বছর ধরে ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা দলিল বন্ধক দিয়ে ব্যাংক ঋণ নিতে পারছেন না। এতে করে থমকে গেছে বাজারফান্ড এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ। যার প্রভাব পড়ছে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইনে বাধা না থাকলেও জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ভূমি বন্ধকের অনুমতি আটকে থাকায় এই জটিলতা তৈরি হয়েছে।
এদিকে বান্দরবান বাজারফান্ডের জায়গায় ব্যাংক ঋণ কার্যক্রম পুনরায় চালু এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্প জেলা মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবিতে বান্দরবানে সাংবাদিক সম্মেলন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। রোববার (১ অক্টোবর) সকালে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে পার্বত্য এলাকায় নানা বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবর রহমান।
এসময় তিনি বলেন, বান্দরবানে বাজার ফান্ডের জমি বন্ধক রেখে ব্যাংক ঋণ নেওয়ার ধারাবাহিকতা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। কিন্তু ২০১৯ সালে হঠাৎ করেই বাজারফান্ডের জায়গায় ব্যাংক ঋণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর এই সংকট নিরসনে এখনও কোনো কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এতে পাহাড়ি এই জেলায় ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি শ্লথ হয়ে মানুষের জীবনমান নিম্মমুখী হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের অলিখিত দ্বন্দ্বের কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যার প্রভাব সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করবে। তিনি আরও বলেন, বান্দরবান বাজারফান্ড এলাকায় ৮০শতাংশ বাঙালি জনগোষ্ঠী। তাদের প্রতিষ্ঠিত হতে না দেওয়ার জন্য বাজারফান্ড এলাকায় ব্যাংক ঋণ বন্ধ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন আইনগত সমস্যার কারণ উল্লেখ করে বলেন, ব্যাংক থেকে অর্থঋণ নিতে হলে নিজের স্থাবর সম্পত্তি জমা রেখে (মর্টগেজ) সম্পাদনের মাধ্যমে আইনি দলিল তৈরি করতে হয়। কিন্তু বাজারফান্ডের প্লটগুলো লিজ দেওয়া। আইনগতভাবে যে জায়গার মালিক না, সেখানে মর্টগেজ দেওয়ার সুযোগ নেই। এটি নিয়ে ব্যাংকের সঙ্গে দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য তিনপক্ষ মিলে মিটিং হয়েছে। সভার বিস্তারিত কার্যবিবরণী হাতে এলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেরায় হাটবাজার পরিচালনা এবং উন্নয়নের জন্য ১৯৮৫ সালে গঠিত হয় ‘বাজারফান্ড’। প্রথমে জেলা প্রশাসন, পরে ১৯৮৯ সালে এটির দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলা পরিষদে। আর জেলা পরিষদ থেকে ইজারার মাধ্যমে ভোগ-দখলসহ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছে বাসিন্দারা।
এইউ