সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
নড়াইল-২ আসনের আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ও জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এ এম আবদুল্লাহ (অব.) নিজেকে নিরাপত্তাহীন দাবি করেছেন। বর্তমান সংসদ সদস্য মাশরাফির লোকজন এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তাকে হত্যা চেষ্টাসহ তার ওপর নারকীয় হামলার প্রশাসনিক তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনারও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
নড়াইল সদর উপজেলার আলোকদিয়া বাজারে শাহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বুধবার(১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এ এম আবদুল্লাহর গাড়ি বহরে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় মাইক্রোবাস, একটি প্রাইভেট ও ১০ থেকে ১৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ সময় এ এম আবদুল্লাহসহ ১০ জন আহত হন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ এম আবদুল্লাহ বলেন, বিগত প্রায় এক বছর যাবত তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের মাঝে প্রচার করছেন। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার তিনি গাড়িবহর নিয়ে নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ হয়ে মাইজপাড়ার উদ্দেশে রওনা হন। শাহাবাদ ইউনিয়নের আলোকদিয়া বাজারে পৌঁছানোর পর একদল সন্ত্রাসী অতর্কিত তার গাড়ি এবং তিনিসহ অন্যান্যদের ওপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা এসেই তাকে হামলার সময় অকথ্য গালাগাল দিয়ে বলতে থাকে ‘এখানে এমপি মাশরাফি আছে, তুই কেন আসলি, এমপি হতে পারলে আসবি।’ এভাবে তারা গাড়ি ভাংচুর এবং বহরে থাকা লোকদের পেটাতে থাকে। তিনি দ্রুত গাড়ি চালিয়ে চলে আসার চেষ্টা করলে ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেল পেছনে পেছনে এসে পুনরায় হামলার চেষ্টা চালায়। দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কয়েকবার কুপানোর চেষ্টা করে। চাইনিজ কুড়ালের মাথা ভেঙ্গে তাকে বহনকারী গাড়ির মধ্যে পড়ে। এই বিভ্রান্ত হামলায় হতবিহ্বল, আশ্রয়হীন ও অনেকটা চেতনাহীন অবস্থায় তিনি নড়াইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে আশ্রয় নেন। এরপর তিনি খবর পান তার গাড়িবহরের ১৫ থেকে ২০টি মোটরসাইকেল, একটি প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস ভাংচুর করা হয়েছে। প্রায় ৫০ জন বিভিন্নভাবে তাদের মারপিটে আহত হয়েছেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিমও আহত হন। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অবস্থানের পর তিনি সকলকে নিয়ে লোহাগড়া ফিরে যান।
সংবাদ সস্মেলনে তিনি আরও বলেন, ছাত্র রাজনীতিসহ রাজনৈতিক জীবনে তিনি ও তার পরিবার নানাভাবে বিরোধী রাজনৈতিক দলের মামলা, হামলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু আজ দল ক্ষমতায়। প্রধানমন্ত্রী গত ১৫ বছর এদেশ ও এদেশের মানুষের জীবন মানে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। আগামী নির্বাচনে তার দল ও নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় আনার লক্ষ্যে তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচারে গিয়ে হামলার শিকার হওয়া অকল্পনীয়।
সংবাদ সস্মেলনে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এখানে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই বর্তমান সংসদ সদস্যের ফেসবুক কেন্দ্রীক সমর্থক গোষ্ঠী তাকে নানারকম ভয়ভীতি, কটূক্তি ও মিথ্যা প্ররোচণা চালায়। বর্তমান সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অন্য কেউ প্রার্থী হতে পারবে না এটাই তাদের মূল বক্তব্য। তিনি এ ধরনের মানসিকতার তীব্র প্রতিবাদ জানান। সেই মানসিকতার সঙ্গে এই হামলার সম্পর্ক থাকতে পারে বলে নানা ঘটনায় প্রতীয়মান হয়েছে। এ কারণে তাকে হত্যাচেষ্টাসহ নারকীয় হামলার প্রশাসনিক তদন্ত করে দোষীদের অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য তিনি সংবাদ সস্মেলনে দাবি জানান।
সংবাদ সস্মেলনে এ এম আবদুল্লাহ বলেন, এরকম পরিস্থিতিতে তিনি নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন। তিনি এই অরাজনৈতিক পরিবেশের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং অতীতের হারানো গৌরব ও ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
সাংবাদিক সম্মেলনে লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শেখ ওয়াহিদুজ্জামান বাচ্চু, উপজেলার নবগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন মোল্যা, আওয়ামী লীগ নেতা মুন্সী শরিফুল ইসলাম, খায়ের উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেন, বুধবার ঘটনা জানার পর আমি আমার ফেসবুকে যে স্ট্যাটাস দিয়েছি সেটিই আমার বক্তব্য।
তিনি লিখেছেন, গণতান্ত্রিক দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন চিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরা আমাদের সবারই দায়িত্ব ও কর্তব্য।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর)বিকালে শাহবাদ ইউনিয়নের আলোকদিয়া বাজারে জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) এ এম আব্দুল্লাহ ভাইয়ের গাড়ি বহরে যে ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
জেবি