সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এস এম নুনু মিয়া, তার ব্যক্তিগত সহকারী বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য দবির মিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
সরকারি বরাদ্দের ওয়াশ ব্লক ও কালভার্ট দেওয়ার প্রলোভনে প্রায় চার লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সিলেটের সিনিয়র চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে এ মামলা করা হয়।
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের তেঘরি গ্রামের জামাল আহমদ বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলার অন্য অভিযুক্তরা হলেন বিশ্বনাথ পৌরসভার মিয়াজানেরগাঁও গ্রামের দবির মিয়ার মা সফুল বিবি এবং সুহেল শিকদার।
মামলার লিখিত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বাদী জামাল আহমদ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি হওয়ায় অভিযুক্ত উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী দবির মিয়ার সঙ্গে পরিচয় ছিল। ওই পরিচয়ের সুবাদে ২০২২ সালের অক্টোবরের শেষদিকে দবির মিয়া বাদীকে জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়ার কাছে ওয়াশ ব্লক ও কালভার্টের সরকারি কাজ এসেছে। জামাল যদি যোগাযোগ করেন তাহলে তিনি নুনু মিয়ার কাছ থেকে কিছু কাজ তাকে ব্যবস্থা করে দেবেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য জামাল নুনু মিয়ার অফিসে গেলে তিনি জানান, ৩০ হাজার টাকা করে ফি দিলে যতটি ইচ্ছা ততটি কাজ নিতে পারবেন। পরে দবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওয়াশ ব্লক পাওয়ার উপযুক্ত ১১টি পরিবারের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে, একটি পরিবারের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা, তেঘরি নতুন জামে মসজিদের জন্য তিনি নিজে ১০ হাজার টাকা ও চারটি পরিবারের একটি কালভার্টের জন্য ৩০ হাজার টাকা মিলিয়ে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন জামাল।
মামলার বাদী জামাল আহমদ বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া ও দবির মিয়াসহ অপর আসামিরা কৌশলে আমার কাছ থেকে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।
তিনি বলেন, দবির মিয়ার কথা অনুযায়ী গত বছর ওয়াশ ব্লকের জায়গা পরিদর্শনে আসা ইঞ্জিনিয়ার পরিচয়দানকারী সুহেল শিকদার নামে এক ব্যক্তিকে ওই টাকা থেকে ৮ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন সময়ে কয়েক ধাপে এস এম নুনু মিয়াকে এক লাখ টাকা, দবির মিয়াকে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা ও তার মা সফুল বিবিকে এক লাখ ৪২ হাজার টাকা দেন দিই। পরবর্তীতে দবির একটি বিকাশ নম্বর দিয়ে ওই নম্বরে ১০ হাজার টাকা পাঠাতে বললে আমি সে টাকাও পাঠাই।
জামাল বলেন, এরপর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও ওয়াশ ব্লক ও কালভার্ট না পেয়ে এক পর্যায়ে নুনু মিয়ার কাছে গিয়ে টাকা ফেরত চাইলে তার ব্যক্তিগত সহকারী দবির মিয়া চলতি বছরের ২৯ জুন তার বাড়ি থেকে গিয়ে টাকা আনতে বলেন। ওইদিন দবির মিয়ার বাড়িতে গেলে তার মা সফুল বিবি দবির মিয়ার সই করা ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার একটি চেক আমাকে দেন। কিন্তু ওই চেকের কথায় লেখা অংশ ওভার রাইটিং করা এবং প্রাপকের জায়গা সম্পূর্ণ খালি ছিল। বর্তমানে টাকা ফেরত চাইতে গেলে অভিযুক্তরা আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন, এমনকি হত্যা করে মরদেহ গুম করে ফেলার হুমকি দেওয়ায় আর কোনো উপায় না পেয়ে আদালতের আশ্রয় নিয়েছি।
এদিকে, ওয়াশ ব্লকের জায়গা পরিদর্শনকারী সুহেল শিকদার বলেন, আমি ঠিকাদার হিসেবে সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো টাকা নিইনি। টাকা নেওয়ার অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বনাথ উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে একটু আগে জানলাম আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। একটি চক্র আমাকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া ঠেকাতে নানা ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, বিশ্বনাথ একটি প্রবাসী অধ্যুষিত উপজেলা। বিগত তিন-চার বছরে আমি অনেক প্রবাসীকে দেশে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করেছি। হঠাৎ একজন মাতাল জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েই বিশ্বনাথকে অশান্ত করছেন। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের গালমন্দ করছেন। সবকিছু আমি আইনিভাবে মোকাবিলা করবো।
জেবি