সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
রংপুরের কাউনিয়ায় ঘর থেকে সুমাইয়া আক্তার সোমা নামে এক স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার হারাগাছ পৌর এলাকার প্রামানিকপাড়া ভেল্লুটারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সুমাইয়া আক্তার সোমা ওই গ্রামের টুটুল মিয়ার মেয়ে এবং ধুমেরকুটি হায়দারীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।
নিহতের পরিবার ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, এক বছর ধরে হারাগাছ পৌর এলাকার প্রামানিকপাড়া ভেল্লুটারী গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে হৃদয় মিয়ার সঙ্গে সুমাইয়ার প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দিনগত রাতে হৃদয় ও সুমাইয়ার বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়। সে সময় হৃদয়ের ভগ্নিপতিও উপস্থিত ছিলেন। বিয়ে রেজিস্ট্রেশন হওয়ার পর হৃদয় সব সুমাইয়ার বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে সুমাইয়াকে ফোন করেন হৃদয়। দুইজনের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়। হৃদয়ের সঙ্গে কথার পর সুমাইয়া মনমরা হয়ে ফোন রেখে বাড়ির বাইরে যান। এরপর বিকেলে ঘরের আড়ার সঙ্গে সুমাইয়াকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় তার মা।
সুমাইয়ার মা মনিরা বেগম বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। সে সকাল থেকে হাসি খুশি ছিল। দুপুরে হৃদয়ের সঙ্গে কথা বলার পরই মেয়েটা চুপচাপ হয়ে যায়। হৃদয় এমন কিছু কথা বলেছে যে মেয়েটা মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আত্মহত্যা করেছে। এরজন্য হৃদয় ও তার পরিবারের লোকজন দায়ী। তারা বিয়ে অস্বীকার করতে হৃদয়কে চাপ দিত। আমার মেয়ে মরে গেছে, আমি এদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
সুমাইয়ার বাবা টুটুল মিয়া বলেন, বিয়ে রেজিস্ট্রি হলেও ছেলের পরিবার যৌতুক এবং স্বর্ণালঙ্কার ছাড়া মেয়েকে ঘরে তুলবে না বলে জানিয়েছিল। পারিবারিকচাপে হৃদয় ফোনে মেয়েকে ভয়ভীতি ও আজেবাজে কথা বলায় আমার মেয়েটা আত্মহত্যা করেছে। আমি এদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার রাতে থানা পুলিশকে সবকিছু বলেছিলাম। কিন্তু থানা পুলিশ অপমৃত্যু মামলার কাগজে আমার সই নেয়।
হারাগাছ পৌরসভার কাউন্সিলর মাসুদার রহমান বলেন, শুনেছি ছেলে ও মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ছেলের পরিবার বিষয়টি মেনে না নেওয়ায় মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে বলে স্বজনরা জানিয়েছে।
হারাগাছ থানা উপ-পরির্দশক (এসআই) কমল মোহন্ত জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এসআই কমল মোহন্ত বলেন, নিহতের পরিবার, স্বজন এবং আশপাশের লোকজনের ভাষ্য মতে মেয়েটি মানসিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে আসল ঘটনা জানা যাবে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, ওই কিশোরীর আত্মহত্যায় কারো প্ররোচনা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেবি