সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন রোগীর স্বজনরা। এ সময় নার্স, ইন্টার্ন চিকিৎসক ও আনসার সদস্যসহ চারজন আহত হয়েছেন।
সোমবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হাসপাতালের নতুন ভবনের ৩৫নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ চার হামলাকারীকে আটক করেছে।
এ সময় চিকিৎসকের দুটি কক্ষ ও নার্স স্টেশনে ভাঙচুর চালানো হয়। হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে ও কর্মস্থলে নিরাপত্তার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। কর্মবিরতি ঘোষণার পরপরই হাসপাতালের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রয়েছেন কয়েক শতাধিক ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা।
জানা গেছে, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বাসিন্দা এক রোগীকে সোমবার দুপুরে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হৃদরোগে আক্রান্ত ওই রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটলে স্বজনরা চিকিৎসককে পাননি। পরে ওই রোগীর মৃত্যু হলে স্বজনরা হামলা চালান চিকিৎসকের দুটি কক্ষ ও নার্স স্টেশনে। হামলায় কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স, আনসার সদস্যসহ চারজন আহত হন। এ সময় ভাঙচুরও চালান রোগীর স্বজনরা।
খবর পেয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঞাসহ হাসপাতাল প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ঘটনাস্থলে যান। পরে পুলিশ পৌঁছায় ঘটনাস্থলে। এ সময় পুলিশ চার হামলাকারীকে আটক করে। হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে রাতে বৈঠক করে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ।
ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি মো. রাকিব হোসেন বলেন, মারা যাওয়া রোগীর স্বজনরা দায়িত্বরত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ক্রমাগত ভীতি প্রদর্শন, হুমকি এবং শারীরিক হেনস্তা করার চেষ্টা করে। এরপর হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনা প্রমাণ করে হাসপাতালে চিকিৎসকদের কোনো সুস্থ কর্মপরিবেশ নেই। এ অবস্থায় হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা, দোষীদের বিচারের দাবিতে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হলো।
হাসপাতালে দায়িত্বরত ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. মো. মোস্তাকিম বলেন, হাসপাতালে এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। রোগীর স্বজনরা মৃত্যু মেনে নিতে পারে না। তারা চিকিৎসকদের ওপর হামলা ও হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। এভাবে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রাহমান ভূঞা বলেন, রোগীর স্বজনরা হামলা চালিয়ে চিকিৎসকের দুটি কক্ষ ও নার্স স্টেশন ভাঙচুর চালিয়েছে। হামলায় আমাদের কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স, আনসার সদস্যসহ চারজন আহত হয়েছেন। চারজনকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে ইন্টার্ন চিকিৎকরা ধর্মঘট ডেকেছেন। আমি তাদের বলেছি রোগীদের যাতে সমস্যা না হয় তার জন্য আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তায়ও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ওসমানী মেডিকেলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। চিকিৎসকের দুটি কক্ষ ও নার্স স্টেশন ভাঙচুর ও কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স, আনসার সদস্যসহ চারজন আহত হয়েছেন। হামলার ঘটনায় চারজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জেবি