সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিন একনামে সবারই চেনা। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ নিহত চা দোকানদার মধুসূদন দে’র স্মরণে নামকরণ হয় এই মধুর ক্যান্টিনের। যিনি সবার কাছে পরিচিত ছিলেন মধুদা নামে। এবার সেই মধুদা পেলেন শহিদ বুদ্ধিজীবীর স্বীকৃতি।
মধুদা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সাধারণ ‘চা দোকানি’। কিন্তু স্বাধিকার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ভূমিকায় তার প্রভাব ছিল। তাই পেশাগত পরিচয়ের বাইরে গিয়ে ব্যতিক্রমীভাবে তাকে দেওয়া হলো বুদ্ধিজীবীর মর্যাদা।
রোববার (২৪ মার্চ) প্রকাশ করা হয়েছে আরও ১১৮ জন শহিদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা। এ নিয়ে চার দফায় ৫৬০ জন শহিদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করল সরকার। আর এ পর্বের তালিকায় আন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে মধুদাকে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, (শহিদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করার ক্ষেত্রে) আমরা দু’এক জায়গায় ব্যতিক্রম করেছি। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুদা, ইনি শিক্ষক, লেখক কিংবা গবেষকও না, শিল্পীও না। উনি এমন একজন ব্যক্তি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবাই ওনাকে চেনেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক দেশ স্বাধীন সংক্রান্ত যত আন্দোলন হয়েছে, সেখানে ওনার একটা অনন্য ভূমিকা ছিল।
তিনি বলেন, এ রকম কিছু ব্যক্তি বিশেষ বিবেচনায় গেছে (তালিকায় অন্তর্ভুক্ত)। উনি (মধুদা) সাধারণ একজন চায়ের দোকানদার। তিনি আবার বৃদ্ধিজীবী হয় কী করে! কিন্তু ওনার যে অবদান ২৩ বছরে যত নেতাকর্মী দেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন, উনি তাদের সহযোগিতা করেছেন। বিনা পয়সায় চা খাইয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, তালিকা করার ক্ষেত্রে আমরা আর ব্যতিক্রম করিনি। একটাই করেছি, মধুদারটা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত তার একটা সনদও আছে, যেখানে বঙ্গবন্ধু তাকে (মধুদা) বুদ্ধিজীবী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
তালিকায় মধুসূধন দে বা মধুদার বাবার নাম লেখা হয়েছে আদিত্ত্ব চন্দ্র দে, মায়ের নাম লেখা হয়েছে যোগমায়া দে। গ্রাম বা মহল্লা-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, থানা-রমনা, জেলা-ঢাকা।
জানা যায়, ১৯৩৪-৩৫ সাল থেকে মধুদা তার পিতার সঙ্গে খাবারের ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৩৯ সালে পক্ষাঘাতের কারণে পিতার মৃত্যু হলে মধুদা পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের দাবির প্রেক্ষিতে ডাকসু কার্যক্রম শুরু হয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের পাশে মধুদার দায়িত্বে ক্যান্টিন প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৭১ সালে মধুর ক্যান্টিন পাক বাহিনীর রোষানলে পড়ে। এরই সূত্র ধরে ’৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মম ভাবে শহীদ হন মধুদা, তার স্ত্রী, বড় ছেলে ও তার নববিবাহিত স্ত্রী। মধুদার স্মরণে মধুর ক্যান্টিন প্রাঙ্গনেই নির্মিত হয় শহীদ মধুদার স্মৃতি ভাস্কর্য। ভাস্কর্যটির গায়ে লেখা রয়েছে ‘আমাদের প্রিয় মধুদা’ বাক্যটি।
এও