সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা জি এম কাদের বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার সিন্দাবাদের দৈত্য হয়ে জনগণের কাঁধে চেপে বসেছে। বর্তমান সরকার শক্তি-সামর্থ দিয়ে এই দেশটাকে দখল করে ফেলেছে। এখন জনগণের কথার কোনো দাম নেই, তাদের কথায় জনগণকে চলতে হচ্ছে।
শনিবার (১১ মে) জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তরের এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, জাতি আজ চরম সংকটময় সময় পার করছে। দিন যতই যাচ্ছে সংকটের গভিরতা ততই বাড়ছে। আগে আমরা যেটাকে সংকট বলেছি, এখন মনে হচ্ছে সেটা কোনো সংকটই ছিল না। দেশের বেশির ভাগ মানুষ আয় দিয়ে সংসার চালাতে পারছে না। জিনিসপত্রের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। টাকার অবমূল্যায়নে ডলারের দাম বেড়ে গেছে, মূল্যস্ফিতি হচ্ছে। ডলার সংকটের কারণে সরকার আমদানি সংকোচন করেছে। এতে অনেক কলকারখানা বন্ধ হয়ে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়েছে। বেশির ভাগ মানুষ কাজ পাচ্ছে না, খেতে পাচ্ছে না। এমন বাস্তবতায় একটি শ্রেণি ইউরোপের স্টাইলে জীবনযাপন করছে। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বিশাল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন তারা।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের সব চেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে স্বাধীনতা। দেশের মানুষ চেয়েছিল নিজেদের একটি দেশ হবে। প্রজাতন্ত্র মানে প্রজারাই দেশের মালিক। আমাদের দেশ আমরাই চালাব। স্বাধীনতার সেই অর্জন নেই, দেশের ওপর সাধারণ মানুষের মালিকানা ছিনতাই হয়ে গেছে। এখন জনগণের কথা বলার অধিকার নেই, কথা বলতে গেলেই নানা সমস্যা। জনগণের কথা শোনারও যেন দরকার নেই। জনগণের কথায় সে চলে না, তার কথায় জনগণকে চলতে বাধ্য করছে। দেশে একটা শক্তিশালী গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। তাদের রাজনৈতিক দল বলে মনে হয় না। বৈষম্য সৃষ্টির জন্য কোনো পুরুস্কার থাকলে বাংলাদেশ নোবেল প্রাইজ পেত। চাকরি, ব্যাবসা থেকে শুরু করে সব কিছুতেই প্রথম প্রশ্ন, আপনি সরকারি দলের সদস্য কিনা। দ্বিতীয় প্রশ্ন, আপনার পরিবারের কেউ সরকারি দলের বাইরে অন্যকোনো দল করে কিনা। যে রাষ্ট্রের জন্য মানুষ জীবন দিল সেই রাষ্ট্র আজ চলে গেছে একটি গোষ্ঠির হাতে। যারা আওয়ামী লীগের বাইরে তারা অবাঞ্ছিত। অবস্থা এমন যেনো.. থাকলে দাশ হিসেবে থাকেন, না থাকলে যান। কথা বলার অধিকার নেই কারো।
জি এম কাদের আরও বলেন, রাজনীতিতে গুণগত একটি পরিবর্তন এসেছে। একটি শ্রেণি কিছু সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। তারা ভাবছে, সরকার তো জেকে বসেছে, থাকবেই। তাদের সঙ্গে লাইন দিয়ে যেটুকু পাওয়া যায়। আবার সরকার যাদের নিচ্ছে না, তাদের বাধ্য হয়ে সরকারের বিপক্ষে থাকতে হচ্ছে। তারা না চাইলেও জনগণের পক্ষে দাঁড়াতে হচ্ছে। আমাদের কিছু জায়গা দিয়েছে এটাই হচ্ছে সর্বনাশ। এভাবে চলতে থাকলে সামনের দিকে দেশে আর রাজনীতি থাকবে না, বিরাজনীতিকরণ চলছে। জনগণকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আজকাল নির্বাচনে লোকজন যায় না। তাদের বক্তব্য, আমরা গেলেই কী আর না গেলেই কী। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা সিন্দাবাদের দৈত্য হয়ে মানুষের কাঁধে বসে আছে। সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা মানুষের পাশে থাকব, নাকি সুযোগ-সুবিধার পক্ষে থাকব। জনগণের পক্ষে থাকতে হলে ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা থাকতে হবে। যারা সুযোগ-সুবিধার লোভে পড়েছে, এটা স্বল্প সময়ের জন্য। সামনের দিকে হয়ত তাদের প্রয়োজনীয়তাও থাকবে না। যারা সরকারের দালালি করেছে, তাদের কিন্তু লাথি দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক সামছুল হকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সুলতান আহমেদের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের।
কে