দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, শাকিব খানের কাঁধেই রয়েছে ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রি। ক্যারিয়ারে একাধিক ব্যবসাসফল সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। সেসব সিনেমার প্রযোজকরা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়েছেন।
তবে এর বিপরীত চিত্রও আছে। এমন অনেক প্রযোজক আছেন, যাদের সিনেমার পুরো কাজ শেষ করেননি। এতে করে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন তারা।
২০১৪ সালের পয়লা জানুয়ারি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসকে নিয়ে ‘মাই ডার্লিং’ ছবির শুটিং শুরু করেন পরিচালক মনতাজুর রহমান আকবর। ২০১৫ সালের শুরুর দিকে ছবির ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়। এরপরই ছবিটি আটকে যায়। কোনোভাবেই নায়ক-নায়িকার শিডিউল পাওয়া যাচ্ছিল না। ততদিনে প্রযোজকের কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে। বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও শাকিব খান বাকি শুটিং শেষ না করে দেওয়ায় ২০১৮ সালের ২০ মার্চ ছবির প্রযোজক মনিরুজ্জামান আলাদাভাবে চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি ও শিল্পী সমিতি বরাবর শাকিব-অপুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।
সে সময় প্রযোজক মনিরুজ্জমান চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক ও শিল্পী সমিতিতে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সুবিচার না পেলে আদালতে যাওয়ার কথাও বলেন তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত তা করেননি। আজও তিনি শাকিবের শিডিউল পাননি।
এ ব্যাপারে মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমি ২০১৮ সালে যখন সমিতিগুলোর কাছে অভিযোগ দিয়েছিলাম, তখনই বলেছিলাম সমিতি মীমাংসা করে না দিলে বিষয়টি নিয়ে শাকিবের বিরুদ্ধে আদালতে যাব। কিন্তু ওই সময় অপু বিশ্বাস শিডিউল দিলেও শাকিব দেননি। তখন শাকিব খান নায়িকা পরিবর্তন করে অন্য নায়িকা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। এমনকি বুবলীকেও নেওয়ার কথা বলেছিলেন। যদি তা না হয়, নায়ক-নায়িকার আলাদা আলাদা শট নিয়ে শুটিং শেষ করতে বলেছিলেন শাকিব খান। কিন্তু ছবিটির শুটিং আগে যতটুকু, যেভাবে হয়েছিল, নায়িকা পরিবর্তন করা বা আলাদা করে শট নেওয়া সম্ভব ছিল না। নায়িকা পরিবর্তন করলে সব ফুটেজ ফেলে দিয়ে নতুন করে পুরো শুটিংই করতে হতো। এতে দ্বিগুণ টাকা খরচ হতো। এতে রাজি না হওয়ায় শাকিবের আর শিডিউল পাওয়া যায়নি। ফলে আর কাজটি হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভুল হয়েছে ২০১৮ সালেই মামলাটা করা উচিত ছিল। আদালতে গেলে আমি ন্যায়বিচার পেতাম। কারণ, আমি সঠিক পথে ছিলাম, এখনো আছি।’
মনিরুজ্জামানের ভাষ্য, ‘শাকিবের তখন পারিশ্রমিক ১৫ লাখ টাকা ছিল। শুটিং শুরুর আগে এক চেকেই পুরো টাকা দিয়েছিলাম। প্রায় ৭০ ভাগ কাজ করার পর শাকিব-অপুর কারণে শুটিং আটকে গেল। প্রায় পাঁচ বছর শুটিং শেষ করে দেওয়ার কথা বলে চুক্তির বাইরেও শাকিব খান আরও পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। আমি পাঁচ লাখ টাকা ছবির আরেক শিল্পী অমিত হাসানের মাধ্যমে পরিশোধ করেছিলাম। এরপরও শাকিব খান শিডিউল দেওয়ার অঙ্গীকার রাখেননি। সেই পাঁচ লাখ টাকা ফেরতও দেননি।’
প্রযোজক জানালেন, এই ছবির শুটিং শেষ না করে দেওয়ায় ১০ বছর ধরে তার প্রায় কোটি টাকা আটকে আছে।
শাকিবের বিরুদ্ধে মামলা করার ইঙ্গিত দিয়ে এই প্রযোজক বলেন, ‘একবার ভেবেছিলাম যে ফুটেজ আছে, জোড়াতালি দিয়ে কোনোমতে ছবিটি মুক্তি দেব। কিছু টাকা লোকসান কমবে। কিন্তু ছবিটি এমনভাবে শুটিং করা, কোনোভাবেই সেটা সম্ভব হয়নি। আমার কষ্টের কোটি টাকা জলে যাচ্ছে। সামনের সপ্তাহে চিকিৎসা নিতে দেশের বাইরে যাওয়ার কথা আছে। ফিরে একটা ব্যবস্থা নিতে হবে। আমার কাছে লিখিত সব ডকুমেন্টস আছে। মামলা করব। আর বাড়তি দেওয়া পাঁচ লাখ টাকাও আমাকে ফেরত দিতে হবে শাকিবকে।’
এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি সিনেমার কিছু অংশের শুটিং করে পরে আর শিডিউল দিচ্ছেন না। সেগুলো হলো— ‘লাভ ২০১৪’, ‘স্বপ্নের বিদেশ’, ‘অপারেশন অগ্নিপথ’। তবে তারা মামলা করবেন কি না— সে বিষয়ে কিছু জানাননি।
আরএসও