সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
সড়ক দুর্ঘটনায় দুই সহপাঠী নিহত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য মোহাম্মদ রফিকুল আলম। উপস্থিত ছিলেন সহ-উপাচার্য মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন আহমেদ, রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক মো. রেজাউল করিম প্রমুখ।
চুয়েট কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, ছাত্রদের বৃস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে এবং আগামীকাল শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৯টার মধ্যে ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা এবং তাদের কাছে জব্দ থাকা দুটি বাসের একটিতে আগুন ধরিয়ে দেন।
চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, সকাল থেকে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিল শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি একাডেমিক সভায় চুয়েট বন্ধ ঘোষণা করেছেন উপাচার্য। ছেলেদের আজ বিকেলের মধ্যে এবং মেয়েদের আগামীকাল সকাল ১০টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ সিদ্ধান্তের পর বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা বাসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
জানা যায়, দুই সহপাঠী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের ঘটনায় চার দিন ধরে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। হল ছাড়ার নির্দেশনা পেয়ে শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা চত্বর এলাকায় থাকা শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করেন কিছু শিক্ষার্থী।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশাসন তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে, তারা ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করেছে। তবে আমরা আমাদের ক্যাম্পাস ছাড়বো না। ক্যাম্পাস বন্ধ করে এর সমাধান হবে না। আমরা আমাদের দাবিতে অটল।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার বিকেলে সাড়ে ৩টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে বাসের ধাক্কায় চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা (২২) ও দ্বিতীয় বর্ষের তৌফিক হোসাইন (২১) নিহত হন। আহত হন জাকারিয়া হিমু (২১)। চুয়েটের কাছাকাছি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জিয়ানগর এলাকায় পৌঁছালে তাদের মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় বেপরোয়া গতির শাহ আমানত পরিবহনের একটি যাত্রীবাসী বাস।
দুর্ঘটনার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রথম দফায় সড়ক অবরোধ করা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাস। পাশাপাশি আরও দুটি বাস ভাঙচুর করা হয়।
পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে রাত ৯টার দিকে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীর। পরে সেদিন রাত ৩টায় নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করা হয়। এরপর গত বুধবার প্রায় ১৩ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।