সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
মারামারির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে। নেওয়া হয় থানায়। তাকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় হামলা চলিয়েছে তাঁর অনুসারীরা। আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায় পুলিশ। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ আহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন। ঝিনাইদহের শৈলকুপায় রোববার (৯ জুন) দুপুরে এই ঘটনাটি ঘটে।
ছাত্রলীগের সাবেক ওই নেতার নাম মোস্তাক শিকদার। শৈলকুপার ধলহরা চন্দ্র ইউনিয়নের ধাওড়া গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাক উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, কনস্টেবল সোহান হোসেন, আব্দুস সালাম, ইকবাল হোসেন ও তরিকুল ইসলাম। তাদের শৈলকুপা ও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া থানায় হামলাকারী যারা আহত হয়েছেন তারা হলেন, হাসানুজ্জামান, সাত্তার শিকদার, সাইফুদ্দীন, সোনা মিয়া, জালাল উদ্দীন, আব্দুল ওহাব, ইমরান, ফারুক হোসেন, তুহিন, নাফিজ, সালামত, ইমন, এস এম রিয়াজুল, মুইম, জান্নাত হোসেন, আসাদুজ্জামান, ইমন শিকদার, ফিরোজ শিকদার, আলী আকবর, বায়োজিদ হোসেন, আজগার মন্ডল ও হারুন শিকদার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা সবাই নবনির্বাচিত শৈলকুপা উপজেলা চেয়ারম্যান মাস্তফা আরিফ রেজা মননু ও সংসদ সদস্য নায়েব আলী জোয়ার্দ্দারের সমর্থক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একটি মারামারি মামলায় মোস্তাক শিকদারকে আজ দুপুরে ধাওড়া থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। এর কিছুক্ষণ পরই মোস্তাক শিকদারের কয়েকশ সমর্থক তাকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় হামলা চালায়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে বাধ্য হয়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায়। এ সময় তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
থানায় থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, কয়েকশ লোক জোটবদ্ধ হয়ে থানার প্রধান ফটক দিয়ে থানার মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং অতর্কিতভাবে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় হামলাকারীর সঙ্গে পুলিশের তুমুল সংঘর্ষ বাঁধে। হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ৫০ রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে।
শৈলকুপা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি আব্দুর রহমান রিংকুর অভিযোগ, পুলিশ তাদের ওপর বেআইনি ও অন্যায়ভাবে হামলা করেছে। পুলিশের গুলিতে ৩০ থেকে ৩৫ জন আহত হওয়ার দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ইমরান জাকারিয়া জানান, এজাহারনামীয় আসামি মোস্তাক শিকদারকে রোববার দুপুরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পরপরই আসামির পক্ষে কয়েকশ উচ্ছৃঙ্খল জনতা তাকে ছাড়িয়ে নিতে জোটবদ্ধভাবে থানায় হামলা চালায়। এ সময় তারা থানার প্রধান ফটক খুলে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। পুলিশ তাদের বাধা দিলে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ নিজেদের জানমাল ও সরকারি সম্পদ রক্ষায় বাধ্য হয়ে গুলি ছোঁড়ে।
এদিকে, গত শুক্রবার নায়েব আলী জোয়ার্দ্দার ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মননুর উপস্থিতিতে শৈলকুপা পৌরসভার মেয়র কাজী আশরাফুল আজম থানার ওসি সফিকুল ইসলাম চৌধুরীকে দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে। এমনকি, তাকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে থানা থেকে বিতাড়নের হুমকি দেন। তার এই হুমকির দুদিন পর থানায় এই হামলার ঘটনা ঘটলো।
এ বিষয়ে নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান জানান, তিনি এই ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না । যখন ঘটনা ঘটেছে তখন তিনি ঝিনাইদহ জেলা শহরে অবস্থান করছিলেন। আর নায়েব আলী জোয়ার্দ্দার বলেন, পৌর মেয়রের আপত্তিকর বক্তব্য ও থানায় হামলার ঘটনায় তিনি বিরক্ত এবং ক্ষুব্ধ । তিনি জানান, শনিবার রাত থেকে তিনি গুরুতর অসুস্থ। যে কারণে আজ সংসদ অধিবেশনে যোগদান করতে তার ঢাকায় যাওয়া হয়নি। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।
এম