সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
ওষুধের দামে নির্ধারিত ছাড় না দেওয়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় ওষুধ ব্যবসায়ীদের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫-১৬ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, খুমেকের কে-৩২ ব্যাচের একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে হাসপাতালের সামনের একটি ওষুধের দোকান ওষুধের মূল্যে ১০ শতাংশ ছাড় না নেওয়ায় এ সংঘর্ষ বাঁধে।
পরে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খুমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও সংঘর্ষে যোগ দেন এবং হামলাকারী ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে ওষুধ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের হামলায় ওষুধের দোকানের মালিক-কর্মচারীসহ ১০-১৫ জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে এক পর্যায়ে সেখানে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছাড়াও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, খুলন সিটি করপোরেশনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর হাসান ইফতেখার, খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. দ্বীন-উল ইসলাম, উপাধ্যক্ষ ও খুলনা বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মেহেদী নেওয়াজ, বাংলাদেশ কেমিস্টস্ অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এসএম কবির উদ্দিন বাবলুসহ চিকিৎসক ও বিসিডিএস নেতারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
খুমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি সাইফুল ইসলাম অন্তর ও সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জোহা সজিব বলেন, ওষুধের দোকানদারদের হামলায় একজন চিকিৎসকসহ সাতজন মেডিকেল শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তারা হলেন, ডা. হাসিব, সবুজ সরকার, হাসান ফেরদৌস, মেহেদী, আসিফ, তাহসিন ও নাসির ফুয়াদ।
এছাড়া বাংলাদেশ কেমিস্টস্ অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, মেডিকেল শিক্ষার্থীদের হামলায় ওষুধের দোকানের মালিক-কর্মচারীদের মধ্যে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে ৯ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন, আল-আমিন, বিপ্লব, শাওন, ইসরাফিল, হৃদয়, সোহাগ, মোস্তফা ও মাসুদুর রহমান মাসুদ।
প্রত্যক্ষদর্শী, ওষুধের দোকানদার ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যায় হাসপাতালের সামনের মেসার্স বিপ্লব মেডিসিন কর্নারে সবুজ সরকার নামের একজন মেডিকেল শিক্ষার্থী কিছু ওষুধ কিনতে যান। সেখানে ওষুধের মোট মূল্য হয় ৭০ টাকা। কিন্তু ওই সত্তর টাকার ওষুধে ১০ শতাংশ কমিশন দিয়ে ৬৩ টাকা রাখার অনুরোধ জানান ওই শিক্ষার্থী। কিন্তু মাত্র ৭০ টাকার ওষুধে কোন কমিশন নেওয়ার সুযোগ নেই জানালে এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। কিছুক্ষণ পর আরও কিছু শিক্ষার্থী মিলে ওই দোকানে গিয়ে ওষুধের দরদাম ও অবৈধ ওষুধ বিক্রির অভিযোগ তোলেন।
এক পর্যায়ে আশপাশের ওষুধের দোকানিরা এগিয়ে গেলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পরে তিন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে অন্য শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে ওষুধের দোকানে হামলা চালায়।
খবর পেয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হাসপাতালের সামনের সব ওষুধের দোকান বন্ধ ছিল এবং পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল।
জেবি