গৃহবধূর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় স্বামী-সতিনসহ গ্রেপ্তার ৩
ঠাকুরগাঁওয়ে এক গৃহবধূকে মারধরের পর মাথার চুল কেটে দেন সতিন। নির্যাতনের একপর্যায়ে জ্ঞান হারালে স্বামী, সতিন ও সতিনের ছেলে মিলে তাকে বাঁশঝাড়ে ফেলে আসেন। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট ) বিকেলে পুলিশ নির্যাতনকারী স্বামী নূর আলম, সতিন রুনা বেগম এবং সতিনের ছেলে সুজনকে গ্রেপ্তার করে।
জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মধুপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আফসার আলীর ছেলে নূর আলম প্রথম স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তিন বছর আগে রানীশংকৈল উপজেলার গোগর সরকারপাড়া গ্রামের আব্দুল হকের মেয়েকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখতে তাকে নিয়ে ঠাকুরগাঁও শহরের ভাড়া বাসায় বসবাস করতে থাকেন নূর আলম। এদিকে, ব্যবসার জন্য দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে দেড় লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তিনি। যৌতুক আনতে না পারায় নূর আলম তার ওপর নির্যাতন শুরু করেন।
গত মঙ্গলবার ( ৮ আগস্ট) রাতে নূর আলম ওই ভাড়া বাসায় গিয়ে ফের যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রীকে চাপ দেন। বুধবার সকালে তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে বাইরে থেকে ছিটকিনি লাগিয়ে তার মোবাইল ফোন নিয়ে গ্রামের বাড়ি মধুপুর চলে আসেন। বিষয়টি টের পেয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীও নূর আলমের গ্রামের বাড়ি আসেন। এতে নূর আলম এবং তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী রুনা বেগম ও ছেলে সুজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে নূর আলম, তার প্রথম ও তাদের ছেলে ভুক্তভোগীকে বেধড়ক মারধর করেন। তিনি যাতে পরবর্তীতে ওই বাড়িতে যেতে না পারেন সেজন্য মাথার চুল কেটে দেন সতিন রুনা। নির্যাতনের একপর্যায়ে জ্ঞান হারালে মৃত ভেবে মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে বাড়ির পাশে বাঁশঝাড়ে ফেলে দেন তারা।
এদিকে, খবর পেয়ে রুহিয়া থানার উপ-পরিদর্শক আবু হানিফ ফোর্স নিয়ে গিয়ে বাঁশঝাড় থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে রুহিয়া থানায় মামলা করলে পুলিশ নূর আলম, রুনা বেগম ও সুজনকে গ্রেপ্তার করে।
রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেন, গৃহবধূকে মারধর করে মাথার চুল কেটে বাঁশঝাড়ে ফেলে রাখার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জেবি
