সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
নারায়ণগঞ্জে এক স্কুল শিক্ষিকাকে নিয়ে পালিয়েছে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ মান্নান। তিনি একইসঙ্গে মুসলিমনগর কেএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় স্কুলের শিক্ষিকা রোমানা ফৌজিয়া দুলারীকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় স্কুলের সভাপতির পদ থেকে মান্নানের অব্যাহতি চেয়ে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করে। পরে স্কুল শিক্ষিকার সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগে স্কুল কমিটির সভাপতির পদ থেকে এম এ মান্নানকে অব্যাহতি দেয়া হয়। একইসঙ্গে শিক্ষিকা রোমানা ফৌজিয়া দুলারীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে ফতুল্লার মুসলিমনগর কেএম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে সভা শেষে ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকরা এ সিদ্ধান্ত নেন।
মুসলিমনগর কেএম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম ইব্রাহিম জানান, কয়েকদিন ধরে আমাদের স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও এক শিক্ষিকাকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এমএ মান্নান শিক্ষিকা রোমানা ফৌজিয়া দুলারীকে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে ঘুরতে যায়। বিষয়টি এলাকাবাসী খারাপ দৃষ্টিতে নিয়েছে এবং মিছিল সহকারে স্কুলে এসে আমাদের কাছে বিচার দাবি করেন। পরে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি তারা দুজনই বিবাহিত।
স্বামী-স্ত্রী রেখে তারা উভয়ে পরকীয়ায় আসক্ত হয়েছে। এ নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকবৃন্দ দীর্ঘসময় সভা করে দুজনের বিষয়ে পৃথক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। স্কুলের সুনাম রক্ষার্থে সভাপতির পদ থেকে মান্নানকে অব্যাহতি ও শিক্ষিকা দুলারীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল ও সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী জানান, এমএ মান্নান ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি একটি স্কুলের শিক্ষিকার সঙ্গে পরকীয়া করেন এমন অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বসহ থানা আওয়ামী লীগ দেখছে। দলের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে এমএ মান্নানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে। এ বিষয়ে মান্নান বলেন, ছোট থেকে দুলারিকে ভালোবাসি। অন্যরা যদি দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারে তাহলে আমি করলে দোষের কি? তবে শিক্ষিকা রোমানা ফৌজিয়া দুলারী কোনো মন্তব্য করেননি।
স্থানীয়রা জানায়, এমএ মান্নান হজ পালন করে দেশে এসে স্কুলের শিক্ষিকা দুলারীকে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনা জানাজানি হলে দুই পরিবারসহ এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। দুইদিন পর বিবাহের কাজ সম্পন্ন করে হানিমুন করে তারা এলাকায় ফিরে আসে। পরে দুইজনই দুইজনের বাড়িতে অবস্থান করে। পরে দুই পরিবারের লোকজন মান্নান ও দুলারীর বিয়ের কাজ সম্পন্ন করে। তবে দুলারী তার পূর্বের স্বামী অ্যাডভোকেট আবু তাহেরকে তালাক দিয়েছে কিনা তা নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়। তাছাড়া দুলারী তার স্বামীর সঙ্গে এ বছর হজ পালন করেন। তারা হজ পালন করে দুইদিন বিশ্রাম নিয়ে দুলারী তার স্বামীর সংসার ছেড়ে মান্নানের হাত ধরে পালিয়ে যায়। তারা লঞ্চে কুয়াকাটা গিয়ে হানিমুন করে। কুয়াকাটায় গিয়ে তারা রাত্রিযাপন করে ফের লঞ্চের কেবিন নিয়ে ঢাকায় চলে আসে এবং যার যার মতো তারা নিজ বাসায় অবস্থান করে। আর এ নিয়ে দুই পরিবারসহ এলাকাবাসীর মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়।
এদিকে স্কুল শিক্ষিকাকে নিয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এমএ মান্নান পালিয়ে যাওয়ার সংবাদে স্কুল থেকে মান্নানকে বহিষ্কার করার দাবিতে এলাকাবাসী স্কুলের ভিতরে বিক্ষোভ করে। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির কো-অপ্ট সদস্য সোহেল জানান, স্কুলর সভাপতি এমএ মান্নান স্কুলের একজন শিক্ষিকাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা আমাদের জন্য খুবই লজ্জাজনক। স্কুলের একজন অভিভাবক যদি এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকে তাহলে আমাদের শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে কি শিক্ষা পাবে।
জেবি