দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
ধামরাইয়ে দিনে দুপুরে আবুল কাশেম (৫৭) নামে এক বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পরিবারের দাবি, মাটির ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে হত্যা করা হয়। মৃত্যুর আগে হত্যাকারীদের নামও জানিয়ে গেছেন নিহত বিএনপি নেতা।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এর আগে, ধামরাইয়ের গাংগুটিয়া ইউনিয়নের জালসা এলাকায় বাড়ির পাশে সড়কের ওপরে বিএনপি নেতা কাসেমকে কুপিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
নিহত আবুল কাশেম (৫৭) ধামরাইয়ের গাংগুটিয়া ইউনিয়নের জালসা এলাকার মৃত রইজ উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। তিনি গাংগুটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ছিলেন।
স্ত্রীর ভাষ্য, মৃত্যুর আগে কোপানোয় জড়িতদের নাম জানায় আবুল কাশেম। কোপানোয় জড়িতরা হলেন- আব্দুল জলিল, বাছেদ, বাবু, বিল্টু, আলী, আহাদ, সাইম, গফুর, মালেক। তারা গাংগুটিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা ও ঢাকা জেলা যুবদলের সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদের অনুসারি বলে দাবি নিহত কাশেমের স্ত্রীর।
নিহতের স্ত্রী শাহিদা আক্তার বলেন, আমার স্বামী মানিকগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হন। বাড়ি থেকে পাকা সড়কে ওঠার পর সেখানেই কোপানো হয়। তখনও মারা যায়নি। তখন পাশের বাড়ির একজন ডাকে, ভাবি ভাইকে মেরে ফেলল। দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরেছি। তখন নামগুলো বলে যায়। তারা হলেন, আব্দুল জলিল, বাছেদ, বাবু, বিল্টু, আলী, আহাদ, সাইম, গফুর, মালেক। এরমধ্যে আহাদ আওয়ামী লীগের সময় সারের ডিলার শিপ এনে সারের ডিলারি করে। ওরা মাটির ব্যবসা করে আওয়ামী লীগের সময় কোটিপতি হয়েছে। এখনও ওরা মানুষকে নির্যাতন করে। নির্যাতন করে মেরেই ফেলল। এরা মুরাদের গ্রুপ করে।
নিহতের ছেলে কামরুল হাসান বলেন, ৫ তারিখের পর আওয়ামী লীগের পটপরিবর্তন হয়, তখন তারা ঢাকা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদের সঙ্গে যুক্ত হয়। আমার বাবা গাংগুটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ছিলেন। উনার সঙ্গে বিরোধ মূলত উনি মাটির ব্যবসা করতেন, মাটির ব্যবসা নিয়ে মূলত বিরোধ। এই বিরোধ নিয়ে কিছু দিন আগে আমাদের ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মফিকুল ইসলাম তাকেও কোপায় এই গ্রুপটা। এর কিছু দিন পর আজকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাবাকে হত্যা করা হলো। সবাই মুরাদ গ্রুপের রাজনীতি করে।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলা যুবদলের সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদ বলেন, প্রথমত, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। যেহেতু তিনি নাম বলে রেখে গেছেন। তিনি আমার অনুসারী বলেছেন, আমি বলবো আমার অনুসারী সারা ধামরাইয়েই রযেছে। তারা যদি এর সঙ্গে জড়িত থাকে, আমি এদের বিচার চাই। এই ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। আমি নিজে তাদের বিচার চাই। আমি কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করি না। কারণ যেটা ন্যায়, যেটা সত্য, সেটি প্রতিষ্ঠিত হোক। মিথ্যা অভিযোগের কারণে যাতে যারা প্রকৃত দোষী, তারা বের হয়ে যেতে না পারে।
সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি চিকিৎসক ডা. মেরাজুর রেহান পাভেল বলেন, তার ডান পায়ের পেছনে থাইয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। খুব সম্ভবত অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মারা গেছে, এটা আমরা ধারণা করছি। কয়েকটি গভীর ক্ষত রয়েছে। বাকিটা পোস্টমর্টেমের পর জানা যাবে।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, নিহতের স্ত্রী কোপানোর সঙ্গে জড়িতদের নাম জানিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে হত্যার খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এই বিষয়ে তদন্ত চলমান। হত্যায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে চেষ্টা চলছে।
এফএইচ/