দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
নেত্রকোনা সদর উপজেলায় যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রীকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে আমতলা পূর্বপাড়া গ্রামের এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বুধবার বিকেলে মামলা হয়েছে। ঘটনার পর অভিযুক্ত স্বামী রমজান মিয়াকে (৩২) আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। নিহত নারীর নাম সালমা বেগম (২৪)। তিনি মোহনগঞ্জ উপজেলার পালগাঁও গ্রামের আলতু মিয়ার মেয়ে এবং পূর্ব আমতলা গ্রামের রমজান মিয়ার স্ত্রী। আটক রমজান মিয়া একই গ্রামের মো. হাসেম মিয়ার ছেলে।
এলাকার বাসিন্দা ও নিহতের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ছয় বছর আগে রমজান মিয়ার সঙ্গে সালমার বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে চার বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে রমজান জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়েন। তিনি বিভিন্ন সময় তার স্ত্রীকে টাকার জন্য চাপ দিতেন। এছাড়া তার শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে সালমাকে চাপ দেন। কিন্তু সালমা বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে আপত্তি জানালে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন রমজান। এসব বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। রমজান গত কয়েক বছর ধরে সালমাকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করছিলেন। কিন্তু মাস দুয়েক আগে স্ত্রীকে ঢাকায় রেখে গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় চলে আসেন। তারপর গত মঙ্গলবার সালমা ও তার ছেলেকে ঢাকা থেকে নেত্রকোনায় নিয়ে আসেন। কিন্তু ওই দিন রাত পৌনে ১২টার দিকে দাম্পত্য কলহের জেরে সালমাকে হত্যা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে রমজানের বিরুদ্ধে।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রমজানকে আটক করে। এই ঘটনা নিহতের বড় ভাই বুধবার বিকেলে রমজান মিয়াকে প্রধান করে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন রমজানের দুই ভাই জুয়েল মিয়া, জামাল মিয়া ও তাদের মা বাবা হাসেম মিয়া।
সালমা বেগমের বড় ভাই সবুজ মিয়া বলেন, রমজান মিয়া আমার বোনকে মারধর করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। তাকে এ কাজে তার দুই ভাই ও বাবা সহযোগিতা করেছেন। হত্যার পর রমজান ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে নিজের মাথা নিজে দেয়ালে ঠেকিয়ে মাথা ও মুখ ফাটিয়ে আহত হন। তখন প্রতিবেশীসহ স্থানীয় লোকজন বাড়িতে এসে ঘটনাটি জানতে পেরে রমজানকে আটক করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, পুলিশ অভিযুক্ত রমজানকে আটক করেছে। নিহত সালমার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে নিহতের বড় ভাই সবুজ মিয়া বাদীর হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় রমজান মিয়াকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।