সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
প্রায় দেড় কোটি পাওনা টাকার দাবিতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ মো. ছাদিকুজ্জামান খান সুমনের বাড়ি ও কলেজে গিয়ে অবস্থান করেন কয়েকজন ইটভাটার মালিক।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। প্রথমে দৌলতপুর উপজেলা শহরের মাস্টারপাড়ায় ছাদিকুজ্জামান খানের বাড়িতে অবস্থান নেন তারা। এরপর তিনি যে কলেজের অধ্যক্ষ, সেই কলেজে গিয়ে অবস্থান নেন এবং শিক্ষকদের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানান।
ইটভাটার মালিকেরা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দলের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঠিকাদারি কাজ করতেন ছাদিকুজ্জামান খান সুমন। তিনি উপজেলার বিভিন্ন সড়কে পাকাকরণ কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি বিলাসবহুল বাসভবন নির্মাণ করেছেন। গত ৮ থেকে ১০ বছরে ঠিকাদারি কাজ ও বাসভবন নির্মাণের জন্য দৌলতপুরের বিভিন্ন ইটভাটার মালিকদের কাছ থেকে বাকিতে প্রায় দেড় কোটি টাকার ইট কিনে নেন ছাদিকুজ্জামান। এদের মধ্যে কয়েকজন ইটভাটার মালিককে চেক দেওয়া ব্যাংক থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ছাদিকুজ্জামান আত্মগোপনে চলে যান।
টাকা না পেয়ে ইটভাটার মালিকেরা ছাদিকুজ্জামান খানের বাড়িতে যান। এ সময় ইটভাটার মালিকেরা সুমনের বাবা মো. মাফিকুজ্জামান খানের সঙ্গে কথা বলেন। তবে ছাদিকুজ্জামানের সঙ্গে তার বাবার যোগাযোগ নেই বলে ইটভাটার মালিকদের জানান মো. মাফিকুজ্জামান খান। এরপর ইটভাটার মালিকেরা দৌলতপুর কলেজে যান। ওই সময় কলেজ পরিচালনা কমিটির সভা চলছিল। সভা চলাকালে কলেজের পরিচালনা কমিটির কাছে তারা মৌখিক অভিযোগ দেন।
সাদীপুর গ্রামের ইটভাটার মালিক মামুনুর রহমান জানান, ‘আমার ভাটা থেকে ২২ লাখ টাকার ইট নেন ছাদিকুজ্জামান। আজ না কাল করে টাকা না দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হয়রানি করছেন। অবশেষে বাধ্য হয়ে আমরা তার ও তার বাবার বাড়ি এবং কলেজে গিয়ে অভিযোগ দিতে বাধ্য হয়েছি।’
একই অভিযোগ করে রিফায়েতপুর গ্রামের ইটভাটার মালিক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত কয়েক বছরে তার ভাটা থেকে বাকিতে ৩২ লাখ টাকার ইট কেনেন ছাদিকুজ্জামান। নানা অজুহাত দেখিয়ে টাকা দিতে গড়িমসি করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ছাদিকুজ্জামান পালিয়ে যান। টাকার জন্য তাকে খুঁজছি। কোথাও পাচ্ছি না।’
স্বরূপপুর গ্রামের ইটভাটার মালিক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি ছাদিকুজ্জামানের কাছে ১৬ লাখ টাকা পাবেন। টাকার জন্য তাকে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেন না। টাকা না পেয়ে হয়রানির শিকার হয়ে অবশেষে রোববার অভিযোগ দিতে বাধ্য হয়েছি।’
ইটভাটার মালিকদের অভিযোগের বিষয়ে দৌলতপুর কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ইটভাটার মালিকেরা দৌলতপুর কলেজের পলাতক অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান সুমনের কাছে প্রায় দেড় কোটি টাকা পাবেন। এ বিষয়ে তারা অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে পরিচালনা কমিটির সভায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
ইটভাটার মালিকদের পাওনা টাকা না দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য বেশ কয়েকবার ছাদিকুজ্জামানের মুঠোফোনে কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
আরএ