সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
মাদারীপুরের রাজৈর থানার পুলিশের দুই সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) নারী নিয়ে অশ্লীল নৃত্যের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। রাজৈর থানায় কর্মরত ওই দুই এএসআইয়ের সঙ্গে ছিলেন রাজৈর উপজেলা যুবলীগের কয়েক নেতাও। আর এতেই সমালোচনার ঝড় বইছে পুরো জেলাজুড়ে। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুই এএসআইকে ক্লোজড করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার জানান, শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় বিভাগীয় মামলা হবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। আর অভিযুক্তদের দাবি, তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।
জানা গেছে, মাদারীপুরের রাজৈর থানার দুই এএসআই মো. হাদিবুর রহমান ও স্বপন অধিকারী একটি টিনশেড ঘরে মদ্যপ অবস্থায় একাধিক নারীকে নিয়ে অশ্লীলভাবে নাচানাচি করেছেন। এমন কিছু ছবিও দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তাদের সঙ্গে রাজৈর উপজেলা যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেনকেও দেখা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের নটাখোলা জগদীসের বাড়ি ও আনন্দপুরের ভবতশের বাড়ির সঙ্গে গ্যারেজে মাঝেমধ্যেই আসর বসান বিভিন্ন শ্রেণির বখাটেরা। যেখানে মদ, গাঁজাসহ অবৈধ কর্মকাণ্ড চলে।
অভিযোগ আছে, বিভিন্ন সময়ে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে বেশ কয়েকজন পলাতক যুবলীগ নেতাও সেখানে অশ্লীল কর্মকাণ্ড করে থাকেন। এমন কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার মুখে পড়ে পুলিশ বিভাগ।
এ ব্যাপারে রাজৈর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ মাসুদ খান বলেন, পুলিশ বাহিনী শৃঙ্খলা মেনে কাজ করে। কোনো অবস্থায়ই আইনের বাইরে কিছু করতে পারে না। যদি অন্যায় বা শৃঙ্খলা ভঙ্গের কাজ করে, তার সেই কাজের দায়ভার পুলিশ বাহিনী নেবে না। বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হয়। তিনি তাদের ক্লোজড করেছেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ভিন্ন ভিন্ন কথা বলেছেন অভিযুক্ত দুই এএসআই। এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্বপন অধিকারী বলেন, আমি বিন্দাস মানুষ, মাঝেমধ্যে একটু ফুর্তি করি। অনেক সময় আসামি ধরতে নানা কৌশল নিতে হয়। এতে যদি অন্যায় হয়, তাহলে আমি দোষী। আর অন্যায় না হলে কিছু করার নেই।
অন্যজন মো. হাদিবুর রহমান বলেন, আমার জন্মদিন উপলক্ষে কিছুদিন আগে বন্ধুবান্ধব মিলে একটু ফুর্তি করেছি। কিন্তু সেটা ভিডিও করে কে ভাইরাল করলো বিষয়টি বুঝে আসছে না। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রও হতে পারে। তবে আমি ভুল স্বীকার করছি, এরকম কাজ আর কখনো করবো না।
যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেনের সঙ্গে ওই আসরে মাতলামি করেছেন কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে হাদিবুর রহমান বলেন, কে কে ছিল, সেটা জানি না। আমার বন্ধুরা এমন আয়োজন করেছিল। তাই সেখানে গিয়েছি। তাছাড়া আমাদের শরীরে কোনো ইউনিফর্ম ছিল না। সবারই কমবেশি ফুর্তি করার অধিকার আছে।
এ বিষয়ে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান বলেন, পুলিশ বাহিনী শৃঙ্খলা মেনে কাজ করে। ইতোমধ্যে যে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে, সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। কোনোভাবেই এটা কোনো পুলিশ সদস্য করতে পারে না। তাৎক্ষণিক অভিযুক্তদের পুলিশ লাইনসে ক্লোজড করা হয়েছে। শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় অচিরেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হবে।
অভিযুক্ত এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্য, আসামিদের গ্রেপ্তার না করে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণসহ নানা অভিযোগ রয়েছে বলে জানান তাদেরই সহকর্মীরা। তবে ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হয়নি অনেকেই।
আর যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেন পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার পরিবারও এসব বিষয় কথা বলতে রাজি নয়।
অ