সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
গাজীপুরের শ্রীপুরে মাদকাসক্ত কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলায় ওষুধ ব্যবসায়ী হাসিবুল ইসলাম বাদশা (৪০) নিহত হয়েছেন। এসময় নিহতের স্ত্রী ও শ্যালিকাকে তারা লাঞ্চিত করে। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৩টায় শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখন্ড (মসজিদ মোড়) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, নিহত হাসিবুল ইসলাম বাদশা বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার ইলোহার গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে। সে প্রায় এক যুগ আগে শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা (মসজিদ মোড়) এলাকায় জমি কিনে স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে বসবাস করছে। তিনি মসজিদ মোড় এলাকায় মা-মনি ফার্মেসি দিয়ে ওষুধ ব্যবসায় পরিচালনা করতেন। হাসিবুল এলাকাবাসীর বিপদে খবর পেলেই ছুটে যেতেন এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সহযোগিতা করতেন। তিনি এলাকায় সকলের কাছে ভালো মানুষ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। কারো সাথে তার কোনো বিরোধ ছিল না।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মাওনা (মসজিদ মোড়) দারগারচালা এলাকার আলী আকবরের ছেলে অন্তর (২০) ও মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে রুমান (২০)। তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য।
নিহত হাসিবুল ইসলামের শ্যালক ও মাইক্রোবাস চালক জাহিদুল ইসলাম শিমুল হোসেন বলেন, ঢাকায় আত্মীয়ের বাসা থেকে রাত প্রায় আড়াইটার দিকে মাওনা চৌরাস্তার (মসজিদ মোড়) বাসায় আসি। গাড়ি থেকে মহিলারা নেমে যাওয়ার পর কিশোর গ্যাং প্রধান রুবেলসহ ৭/৮ জন সহযোগী মাইক্রোর সামনে এসে দাঁড়ায়। তখন রুবেল দুলাভাইকে (হাসিবুল) বলে তোদেরকে উড়াইয়া দিমু। তখন দুলাভাই বলে ভাগিনা (রুবেল) তোমরা চলে যাও। এ কথা বলামাত্রই রুবেল ও তারে সাথে থাকা ২/৩ জন দুলাভাইকে কিল ঘুষি মারতে থাকে। পরে তিনি মাটিতে পড়ে যায়। তার সাথে থাকা অন্যরা বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে নিহতের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার ও শ্যালিকা সালমা আক্তরের গলার চেইন ছিনিয়ে নেয়। এসময় বাধা দেওয়ায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা সালমার স্বামী হানিফকে (২৯) মারধর করে।
নিহতের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার বলেন, কিশোর গ্যাং প্রধান রুবেল ও তার সাথে থানা অন্যরা মাদকাসক্ত ছিল। আমার স্বামী রুবেলকে ভাগিনা বলে ডাকে। রুবেলের মাথায় এবং পিঠে হাত বুলিয়ে তাকে চলে যাওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। তারা আমার স্বামীর অনুরোধ না শুনে তাকে কিল, ঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারতে থাকে। রুবেল ও তার সহযোগিরা বাসার গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আমাকেসহ আমার ছোট বোনকে লাঞ্ছিত করে গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। পরে হাসিবুল ইসলামে স্থানীয় আলহেরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দ্রুত শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পরামর্শ দেয়। ওই হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক আসমাউল হুসনা বলেন, হাসিবুল ইসলামকে তার স্বজনেরা মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারী অন্তর ও রুমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, হাসিবুল ঢাকায় তার আত্মীয়ের বাসা থেকে গভীর রাতে শ্রীপুরের মাওনার নিজ বাসার সামনে হামলার শিকার হন। হামলার ঘটনায় জড়িত অন্তর ও রুমানকে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলাকারী পলাতক রুবেলসহ তার অন্যান্য সহযোগিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
আরএ