সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলীর নিকট তথ্য চাওয়ায় তিন সাংবাদিকের সাথে দুর্ব্যবহার করার করার অভিযোগ উঠেছে। বিনা টিকিটে ট্রেনে ওঠা যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে, ফলে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে- এমন অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে গেলে রেলওয়ের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামান বাবু সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করে তার কক্ষ থেকে বের করে সাংবাদিকদের।
রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। ওই তিন সাংবাদিক হলেন খোলাকাজ ও ঢাকা পোস্টের জেলা প্রতিনিধি নিয়াজ আহমেদ সিপন, ঢাকা ট্রিবিউন ও আমার সংবাদের মহসীন ইসলাম শাওন ও দূরবীন নিউজের জুয়াবের আহমেদ খান।
সাংবাদিকদের হাতে আসা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, চলন্ত একটি আন্তঃনগর ট্রেনে ইউনিফর্ম পরিহিত দুই পরিচর্যক (অ্যাটেনডেন্ট) বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে দরদাম করে টাকা নিচ্ছেন। গত ১৯ নভেম্বর ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেনে এ ঘটনার ভিডিও একজন যাত্রী ধারণ করেন। জানা গেছে, ওই দুই পরিচর্যকের একজন সোহেল রানা ও অপরজন মো. রাহাত।
লালমনিরহাট রেলওয়ের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলীর নিকট তথ্য চাইতে যাওয়া সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন, রোববার বিকেলে ‘বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া’ প্রসঙ্গে পরিচর্যকদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা রেলওয়ের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামান বাবুর কক্ষে যান তারা। নিজেদের পরিচয় দিয়ে ওই ঘটনা প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে সাংবাদিকদের ওপর ক্ষেপে যান ওই কর্মকর্তা। তেঁড়ে উঠে ওই কর্মকর্তা নিজেকে দেশের প্রথম ‘শিশু সাংবাদিক’ দাবি করে নানা ধরনের দম্ভোক্তি দেখাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে সাংবাদিকদের ‘গেটআউট’ বলে নিজের কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়। বের করে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য জানতে ওই কর্মকর্তাকে পরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রতিনিয়ত বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণকারী যাত্রীদের কাছে পরিচর্যকরা টাকা আদায় করেন। আর আদায়কৃত অর্থের একটি অংশ ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগনের প্রকৌশলী তাসরুজ্জামান বাবুর পকেটেও আসে। লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়েতে ‘উগ্র কর্মকর্তা’ হিসাবে পরিচিত ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠার পর গত ১ অক্টোবর তাকে ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগনের প্রকৌশলীর পদ থেকে বিভাগীয় পার্সোনাল অফিসার হিসাবে বদলি করা হয়। কিন্তু সেই পদে যোগদান না করে নানা কৌশল খাটিয়ে আগের পদেই থেকে যান তিনি। এছাড়াও কিছু লোকজন দিয়ে বদলি প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করান ওই কর্মকর্তা। তাছাড়াও একটি সূত্র জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের দলীয় আশীর্বাদ ও খুঁটির জোরে তিনি লালমনিরহাট থেকে সরেনি। আর বিভিন্ন ঠিকাদারের সঙ্গে আতাত করে দীর্ঘদিন রেল বিভাগের কাজের টাকায় ভাগ বসাতেন তাসরুজ্জামান বাবু।
এদিকে লালমনিরহাটে রেলের ইঞ্জিন ও কোচ ঘোরানোর জন্য সম্প্রতি প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে ওই কর্মকর্তার নেতৃত্বে নতুন করে ‘টার্নটেবিল’ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেটি উদ্বোধনের আগেই ভার বহনে অক্ষম হয়ে পড়েছে।
এ বিষয় যোগাযোগ করা হলে লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘যাত্রীসেবা সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো ধরনের অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ সাংবাদিকদের লাঞ্চিত বা দুর্ব্যবহার করার বিষয়ে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে ‘টার্নটেবিল’ নির্মাণ বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি।
আরএ