সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
দেশের প্রথম রাষ্ট্রীয় ‘যুদ্ধশিশু’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মেরিনা খাতুন। গত ৭ জুলাই জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের উপ-পরিচালক (উন্নয়ন) প্রমথ রঞ্জন ঘটক স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে তাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
রোববার (১৪ জুলাই) সকালে তাড়াশ ডাকঘর থেকে স্বীকৃতি সংক্রান্ত একটি চিঠি পেয়েছেন মেরিনা খাতুন। এর আগে স্বীকৃতির জন্য আবেদন করেছিলেন মেরিনা খাতুন।
আবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালে পাক সেনা ও তাদের দোসরদের পাশবিক নির্যাতনে বিধবা বীরাঙ্গনা পচি বেওয়ার গর্ভে জন্ম নেন মেরিনা খাতুন। লোক লজ্জার ভয়ে গর্ভেই মেরিনাকে শেষ করতে চাইলেও অন্য সন্তানদের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত তার জন্ম দেন মা। রাষ্ট্রীয়ভাবে ২০১৮ সালে মা পচি বেওয়ার বীরঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতির পর ২০২২ সালে মেরিনা খাতুন জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নিজেকে যুদ্ধশিশু হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আবেদন করে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকার) ৮২তম সভায় মেরিনাকে যুদ্ধ শিশু হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্ত্রীসভায় প্রস্তাবটি পাঠায় জামুকা। দীর্ঘ সময় পরে মন্ত্রীসভা তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে চিঠি দেয় জামুকাকে। তার আলোকে জামুকার ৮৯তম সভায় মেরিনাকে যুদ্ধশিশু হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
রোববার সে চিঠি পেয়ে আবেগে আপ্লুত হন মেরীনা খাতুন। দীর্ঘ সময় পর মেরিনা খাতুনের এই স্বীকৃতিতে উচ্ছ্বসিত তার পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। তবে তাকে মুক্তিযোদ্ধাদের মতো মাসিক ভাতা দেওয়ার কোনো বিষয় উল্লেখ না থাকায় খানিকটা হতাশও হয়েছেন তারা। সরকার এ বিষয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবে এমনটাই ভাবছেন মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় জনসাধারণ।
জানা যায়, এই স্বীকৃতির কারণে এখন থেকে পিতার নাম অজ্ঞাত রেখেই রাষ্ট্রের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন মেরিনা। মেরিনার স্বজনরা জানান, এই রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ায় তারা উচ্ছ্বসিত। নানা কটুকতা শুনলেও এখন সে কষ্ট আর মনে রাখছেন না তারা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রহমান জানান, যুদ্ধশিশু হিসেবে মেরিনার এই স্বীকৃতি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে আরও সমৃদ্ধ করবে। তবে বয়স বিবেচনা করে তাকেও মুক্তিযোদ্ধাদের মতো ভাতা দেওয়া প্রয়োজন।
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মি. সুইচিং মং মারমা বলেন, সরকার যুদ্ধ শিশুর স্বীকৃতির ঘোষণায় কিছুটা হলেও দায়মুক্ত হয়েছে। সরকারের নির্দেশনায় প্রশাসন যুদ্ধ শিশুর দেখভাল করবে।
আরএ