সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় এক ইউপি সদস্য ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যকে মারধরের অভিযোগে কাজী নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিয়াজ উদ্দিনসহ অবরুদ্ধ তিনজনকে ৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে পুলিশ।
দুর্নীতিগ্রস্ত এই প্রধান শিক্ষককে দ্রুত অপসারণের দাবি শিক্ষক—শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের। তবে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রশাসন।
নিয়োগ বাণিজ্য, গাছ কেটে বিক্রি, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে রোববার সকালে কাজী নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিয়াজ উদ্দিনকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে এলাকাবাসী।
বিষয়টি টের পেয়ে রিয়াজ উদ্দিন তার ছেলে রেজুয়ান আহমেদ কিজয়সহ ৬-৭জন বহিরাগত নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে স্থানীয় ইউপি সদস্য বিরাজ আলী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বিল্লাল হোসেনকে কিল ঘুষি মারেন। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে মারধর করে বাথরুমে অবরুদ্ধ করেন।
এ সময় বিক্ষুব্ধরা বিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে গেটে তালা দেওয়া হয়। পরে বিদ্যালয়ে হামলার আশঙ্কায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের দুটি টিম আসে।
দাওগাঁও ইউনিয়নের ইউপি সদস্য বিরাজ আলী বলেন, দীর্ঘদিন পর আজকে স্কুল খোললে আমরা প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করতে যাই। এ সময় স্থানীয়রা তার বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন করবে বিষয়টি জানালে প্রধান শিক্ষকের ছেলে বিজয় ও তার সঙ্গে আসা ৬-৭জন আমাকে এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বিল্লাল হোসেনকে কিল ঘুষি মারে। বিষয়টি স্থানীয়রা দেখে পাল্টা হামলা করে। এ সময় বিজয় কিছুটা আহত হলে তাকে স্কুলের ভেতর অবরুদ্ধ করা হয়। আর প্রধান শিক্ষক তার রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন।
স্থানীয় আবু সাঈদ বলেন, গত ২৮ মার্চ প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনা মোতাবেক স্কুল পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যরা তাদের পছন্দ মতো সভাপতি নির্বাচিত করতে চাইলে বাধা হয়ে দাঁড়ান রিয়াজ উদ্দিন। এ বিষয়টি কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষক বেশ কয়েকজনের নামে মামলাও করেছেন। এর আগে তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের গাছ কেটে বিক্রিসহ নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। তিনি এলাকার মানুষকে কোনো মূল্যায়ন না করে সবসময় প্রভাব কাটিয়ে চলছেন। প্রধান শিক্ষককে বহিষ্কারের পাশাপাশি বিচার না করা হলে আমরা আন্দোলন অব্যাহত রাখব।
নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, ক্লাসে এসে রিয়াজ উদ্দিন স্যার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। মেয়েদের গায়ে হাত তুলেন। সমসময় অপমান স্বরুপ কথা বলে আমাদের মন নষ্ট করেন। আমাদের স্কুলে বসার মতো বেঞ্চ না থাকলেও তিনি গাছ কেটে বাসার ফার্নিচার বানিয়েছেন। এমন শিক্ষক আমরা চাই না।
মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক আহমেদ বলেন, ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। এরই অংশ হিসেবে আজকে বিদ্যালয়ে উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা প্রধান শিক্ষক, তার ছেলেসহ তিনজনকে অবরুদ্ধ করে রাখলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে প্রধান শিক্ষকসহ তিনজনকে নিরাপদে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করা হয়। স্থানীয়রা মামলা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেবি